কচ ও দেবযানীর প্রেম উপাখ্যান
প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে প্রেমের উপাখ্যানের অসংখ্য উদাহরণ পাওয়া যায়। মহাভারতে বর্ণিত ‘কচ ও দেবযানী'র উপাখ্যান তাদের মধ্যে অন্যতম। এটি একটি প্রেমের গল্প। এর আবেদন এতটাই হৃদয়স্পর্শী যে, এই গল্পের আধারে পরবর্তীকালে অনেক সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছে প্রতিথযশা সাহিত্যিকদের হাত ধরে। প্রসঙ্গত ইংরেজি ১৮৫৯ সালে মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচনা করেন ‘শর্মিষ্ঠা' নাটক। ঐ নাটকের কেন্দ্রবিন্দু কচ- দেবযানীর প্রেম কাহিনীকে ঘিরে আবর্তিত। এটি খুব সম্ভবত বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। নাট্যকার এই নাটকে প্রাচ্যের সমাজব্যবস্থা ও মূল্যবোধের সঙ্গে পাশ্চাত্যের রোম্যান্টিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন অনুপম শৈল্পিক সুষমায়। সে যুগের শিক্ষিত সমাজ এই নাটকটিকে আগ্রহের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন— এ কারণেই।
বাংলা ১৩০০ সনে এই গল্পের কাহিনী অবলম্বনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন ‘বিদায় অভিশাপ' কবিতাটি। কবিগুরু এই কবিতায় কচকে অভিশাপ দেওয়া পর্যন্ত মূল গল্পটির সুরকে অনুসরণ করলেও অন্তিম পর্বে কচ দেবযানীকে অভিশাপ দেননি। বরং কবি ভালোবাসার চিরন্তন শাশ্বত রূপটিকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন কচের কথার মধ্যে দিয়ে-
“আমি বর দিনু দেবী তুমি সুখী হবে
ভুলে যাবে সর্ব গ্লানি বিপুল গৌরবে।”
এ প্রেমের স্নিগ্ধতা ও গভীরতা এতটাই ব্যঞ্জনাময় যে, এ গল্পকে নিয়ে আধুনিককালে একাধিক ভারতীয় ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণও হয়েছে। এককথায়, প্রেমের গল্প হিসাবে কচ দেবযানীর গল্প অত্যন্ত মর্মস্পর্শী, সকলের ভালোলাগার মতো। গল্পের অন্তিম পর্বে কচ দেবযানীর প্রেম প্রত্যাখ্যান করলে দেবযানী কচকে অভিশাপ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মেয়েরাও নিজেদের ভালো-মন্দ বুঝতে জানে। যে কারণে প্রমথনাথ বিশী বলেছিলেন— দেবযানী হলো First Modern Woman in India। এখন আলোচনা করা যাক মহাভারতে বর্ণিত কচ দেবযানীর গল্পটি।
কচ ও দেবযানীর কাহিনীর উৎস সন্ধান করতে গিয়ে জানা যায় যে, ত্রিলোকে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সে সময় দেবতা ও দানবদের মধ্যে তীব্র বিবাদ চলছিল। সেই যুদ্ধে দেবতারা আঙ্গিরস (অঙ্গিরার পুত্র) বৃহস্পতিকে তাঁদের গুরু হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। অন্যদিকে দানবকূলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তাদের গুরুভার্গব শুক্রাচার্য। বলাবাহুল্য, এঁরা দু'জনই ছিলেন ব্রাহ্মণ। নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এঁদের মধ্যেও ছিল একরকম ঠান্ডা লড়াই। দেবতারা রণাঙ্গনে বহু অসুরকে হত্যা করতে সমর্থ হলেও তাদের গুরু শুক্রাচার্য তাঁর সঞ্জীবনী মন্ত্র দিয়ে সবাইকে বাঁচিয়ে তুলতেন। অর্থাৎ যুদ্ধে দেবতারা এককথায় দানবদের পরাস্ত করতে পারছিলেন না; বরং নিজেরা অসুরদের আক্রমণে যখন তখন চোট আঘাত পাচ্ছিলেন। তখন দেবতারা একত্রে বসে না হলে এই যুদ্ধ চলতেই থাকবে। এই সিদ্ধান্তে এলেন যে, সঞ্জীবনী মন্ত্র যেভাবেই হোক নিজেদের আয়ত্ব করতে হবে,
তাই একদিন তাঁরা বৃহস্পতির পুত্র কচের কাছে গেলেন। বললেন— “হে ভগবান! আমরা আপনার সাহায্যপ্রার্থী। অসুরেরা তাদের গুরু শুক্রাচার্যের কৃপায় বারবার জীবিত হচ্ছে। আমরা কিছুতেই তাদের পরাস্ত বা হীনবল করতে পারছি না। এই যুদ্ধে দেবতাদের জিততে হলে সঞ্জীবনী মন্ত্র অবশ্যই জানতে হবে। আপনি যদি গুরু শুক্রাচার্যের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে এই মন্ত্রের অধিকারী হতে পারেন তাহলে দেবতাদের কার্যসিদ্ধি হয়।”
দেবতাদের অনুরোধ কচ উপেক্ষা করতে পারলেন না। তিনি এরপর শুক্রাচার্যের কাছে গেলেন। তাঁকে করজোড়ে প্রণাম জানিয়ে বললেন- “আমি মহর্ষি অঙ্গিরার পৌত্র দেবগুরু বৃহস্পতির পুত্র কচ। আমি আপনার অধীনে অধ্যয়ন করতে চাই । দয়া করে আপনার শ্রীচরণে আমাকে ঠাঁই দিন।”
যেহেতু গুরু বৃহস্পতি এবং শুক্রাচার্যের মধ্যে একটি ঠাণ্ডা লড়াই ছিল, এখনকার দিনে হলে কচের এই অনুরোধ সম্ভবত প্রত্যাখ্যাত হতো। কিন্তু শুক্রাচার্য হলেন ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ, তেজস্বী এবং সিদ্ধ পুরুষ। তিনি কচের এই আবেদন স্বীকার করলেন। বললেন- “পুত্র! তোমাকে স্বাগত। কথা দিচ্ছি, আমি তোমাকে সৎকার করবো। কারণ তোমাকে সৎকার করলে দেবগুরু বৃহস্পতিকেই সৎকার করা হবে।”
সেই থেকে শুরু হলো গুরু শুক্রাচার্যের অধীনে কচের শিক্ষালাভ । কচ অত্যন্ত মেধাবী এবং আদর্শনিষ্ঠ ব্রাহ্মণ সন্তান। তিনি অত্যন্ত প্রসন্ন চিত্তে গুরুর আদেশ যেমন নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতেন, তেমনি ধীরে ধীরে গুরুকন্যা দেবযানীরও প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন আপন গুণ, মেধা ও সুমিষ্ট ব্যবহারের মাধ্যমে।
দেবযানীর যে কোন অনুরোধ কচ রক্ষা করতেন বিনা বাক্য ব্যয়ে। এভাবে কেটে গেল পঁচিশ বছর। ইতিমধ্যে অসুরেরা জেনে ফেলেছে কচের আসল পরিচয় এবং তাঁর অভিপ্রায়টিও। তারা সিদ্ধান্ত নিল যে, কচকে কোনভাবেই সঞ্জীবনী মন্ত্রের অধিকারী করা যাবে না।
একদিন কচ যখন গোচারণে গিয়েছেন, সেই সময় অসুরেরা কচকে হত্যা করলো। তারপর তাকে টুকরো টুকরো করে শিয়াল ও নেকড়ে দিয়ে খাইয়ে দিল। এদিকে দিনাবসানে গোরুর দল আশ্রমে ফিরে এসেছে। কিন্তু গোরক্ষক কচ ফিরে আসেননি। বিষয়টি দেবযানীকে বিষণ্ণ করে তুলল। কচের অনুপস্থিতি তাকে এতটাই নাড়া দিল যে, সে বাধ্য হয়ে তার পিতার কাছে গিয়ে বলল- “হে পিতা! কচ এখনো ফেরেনি। তুমি তো জানো পিতা আমি কচকে কত ভালবাসি। তাকে নিশ্চয়ই কেউ মেরে ফেলেছে। তুমি যেভাবেই হোক তার প্রাণ ফিরিয়ে দাও।”
সব বাবার কাছেই মেয়েরা অত্যন্ত প্রিয় হয়। গুরু শুক্রাচার্যও তাঁর ব্যতিক্রমী নন। তিনি ধ্যানযোগে সকল ঘটনার চিত্র মানসচক্ষে প্রত্যক্ষ করলেন। এরপর সঞ্জীবনী মন্ত্র প্রয়োগ করে তিন বার উচ্চারণ করলেন— “কচ তুমি ফিরে এসো! কচ তুমি ফিরে এসো! কচ তুমি ফিরে এসো।”
এরপর শিয়াল ও নেকড়ের পেট ভেদ করে কচের দেহাংশগুলি একে একে বেরিয়ে আসতে লাগল; এবং তারপর সেগুলি জোড়া লেগে পুনর্জীবন পেলেন কচ। এভাবে দেবযানীর প্রচেষ্টায় এবং শুক্রাচার্যের সঞ্জীবনী মন্ত্রগুণে কচ সে যাত্রায় প্রাণ ফিরে পেলেন।
এই ঘটনা অসুররা মোটেই ভালো ভাবে মেনে নেয়নি। তারা পুনরায় সুযোগ খুঁজতে লাগলো কখন এবং কীভাবে কচকে হত্যা করা যাবে। একদিন তাঁর খোঁপায় একটি বিশেষ ফুল লাগানোর জন্য দেবযানীর খুব শখ হলো। তিনি কচকে ফুলটি সংগ্রহ করতে পাঠালেন। কচ ফুলটি খুঁজতে খুঁজতে এক সময় গভীর বনে প্রবেশ করলেন। সেখানে একদল দানব তাদের নাগালের মধ্যে কাকে পেয়ে গেল এবং সঙ্গে সঙ্গে তাকে হত্যা করল। এরপর তার হাড় মাংস ইত্যাদি টুকরো টুকরো করে সমুদ্রে ফেলে দিল। কচ সন্ধ্যা পর্যন্ত ফিরে আসছে না দেখে দেবযানী আবার পিতার কাছে গিয়ে ঘটনাটি বললেন। ভার্গব শুক্রাচার্য মেয়ের কথা ফেলতে পারলেন না। ধ্যানযোগে ঘটনার প্রকৃতি অনুসন্ধান করলেন। এবং পুনরায় সঞ্জীবনী মন্ত্র প্রয়োগ করে কচের পুনর্জীবন দান করলেন।
পর পর দু'বার এভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর দানবেরা কচকে হত্যা করতে মরিয়া হয়ে উঠলো । এবার তারা আরও শক্তপোক্ত ব্যবস্থা ভেবে নিয়ে কচকে হত্যা করলো। তারপর সেই মৃতদেহ পুড়িয়ে ভস্ম করা হলো। সেই ভস্ম আবার সোমরসে মিশিয়ে গুরু শুক্রাচার্যকে পান করালো। এবারও দেবযানী কচের অনুপস্থিতি দেখে পিতার কাছে কাতর মিনতি করলেন। বললেন—“পিতা! তুমি তো জানো কচ ছাড়া আমার জীবন বৃথা। আমি তাকে ছাড়া এক মুহূর্ত কাটাতে পারি না। তুমি কচকে যেভাবে পারো ফিরিয়ে নিয়ে এসো।”
শুক্রাচার্য আবার ধ্যান যোগে কচের অনুসন্ধান করলেন। তিনি বললেন— “কচ তুমি কোথায় ?”
কচ তখন ভয়ে ভয়ে ধীর গলায় উত্তর দিলেন— “ভগবন! আমি আপনার উদরে অবস্থান করছি।”
শুক্রাচার্য ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধি করলেন। অন্যান্য বারের মতো কচকে সঞ্জীবনী মন্ত্র প্রয়োগ করে বাঁচলে কচ শুক্রাচার্যের পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে আসবে এবং তখন স্বয়ং শুক্রাচার্য মারা পড়বেন। তাহলে কি করা উচিত ? অনেক ভেবে শুক্রাচার্য সিদ্ধান্ত নিলেন এবং কচকে বললেন— “পুত্র, আমি তোমাকে সঞ্জীবনী বিদ্যা দান করছি, তুমি তা গ্রহণ কর। তারপর পুনর্জীবন লাভ করে আমার প্রাণ বাঁচাও।”
কচ বললেন— “হে পিতা! আপনি নিশ্চিত থাকুন, আপনি যেভাবে নির্দেশ দিচ্ছেন আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো।” এরপর কচ শুক্রাচার্যের পেট থেকে বেরিয়ে এলেন। তারপর স্বয়ং শুক্রাচার্যকে জীবিত করলেন সদ্য শেখা সঞ্জীবনী মন্ত্র প্রয়োগ করে।
কচ তখন শুক্রাচার্যকে প্রণাম করে বললেন— “হে দেব! আপনি আমাকে সঞ্জীবনী বিদ্যার মত অমূল্য গুপ্তমন্ত্র প্রদান করেছেন। আপনি আজ থেকে আমার যথার্থ পিতা- মাতা। আমি আজীবন আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। আমি জানি, যে ব্যক্তি তার প্রকৃত পিতামাতা বা উত্তম জ্ঞানদাতাকে অসম্মান করে, সে নরকগামী হয়।”
এরপর শুক্রাচার্য ধ্যানযোগে প্রকৃত ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করলেন। দানবদের ছল-চাতুরীতে তিনি তাদের প্রতি যেমন অসন্তুষ্ট হলেন; তেমনি নিজে একজন সাত্ত্বিক ব্রাহ্মণ হওয়া সত্ত্বেও কিভাবে সুরা পান করলেন তা ভেবে নিজেকে ধিক্কার দিলেন। তিনি ঘোষণা করলেন- “আজ থেকে জগতে যদি কোনো ব্রাহ্মণ সুরা পান করেন, তাহলে তিনি ব্রহ্মহত্যা জনিত পাপের ফল ভোগ করবেন।”
সেই সঙ্গে তিনি আরও বললেন- “আজ থেকে আমি ব্রাহ্মণদের মর্যাদা, ধর্ম ও কর্তব্যবোধ সম্পর্কে একটি সুনিশ্চিত রূপরেখা তৈরী করে দিলাম। সকলে তা যেন সঠিকভাবে মেনে চলেন।” যাইহোক, গুরুদেবের আশীর্বাদী সঞ্জীবনী মন্ত্র পাওয়ার পরও কচ প্রতিশ্রুতি মতো মোট এক সহস্র বছর গুরু শুক্রাচার্যের কাছে ছিলেন। সময় পূর্ণ হলে শুক্রাচার্য তাঁকে স্বর্গে যাওয়ার অনুমতি দিলেন।
কচ যখন স্বর্গে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তখন দেবযানী সেখানে উপস্থিত হলেন এবং বললেন- “হে ঋষিকুমার, তুমি সদাচারী, জিতেন্দ্রিয় এবং ব্রাহ্মণ কুলগৌরব। এই আশ্রমে এতকাল তুমি ছিলে। তোমাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি এবং দীর্ঘকাল ধরে তোমার মধুর সঙ্গ লাভ করেছি। তুমি এখন স্নাতক হয়েছো। আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার সেবিকা হয়ে জীবন ধন্য করতে চাই। তুমি আমাকে বিধিসম্মতভাবে বিবাহ করো।”
দেবযানীর প্রস্তাব শুনে কচ বললেন— “ভগিনী। তুমি আমার গুরুর কন্যা, পূজনীয়া। যে গুরুদেবের শরীরে আমি বাস করেছি এবং সেখান থেকে বেরিয়ে জীবন ফিরে পেয়েছি, তিনি আমার জন্মদাতা। অর্থাৎ ধর্মানুসারে তুমি আমার ভগিনী। তোমার স্নেহচ্ছায়ায় এতকাল ছিলাম তা কখনোই ভোলার নয়। আমাকে গৃহে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দাও। আমার অবর্তমানে তুমি গুরুদেবের সেবা করো। প্রয়োজন হলে আমাকে স্মরণ করো। আমি তোমার ডাককে কখনোই উপেক্ষা করবো না।”
কচের কথায় দেবযানী অত্যন্ত হতাশ হলেন, বললেন, “কচ আমি তোমার কাছে প্রেম ভিক্ষা করলাম। বিনিময়ে তুমি আমায় ধর্ম ও কর্তব্যবোধের পাঠ শেখালে।” তাই আমি তোমাকে এই বলে অভিশাপ দিতে চাই— “যে সঞ্জীবনী বিদ্যার প্রলোভনে তুমি এখানে এলে এবং তা পেয়ে শেষে আমাকে অস্বীকার করলে সেই বিদ্যা তোমার দ্বারা কোনদিন সিদ্ধ হবে না।”
কচ এই অভিশাপে এতটুকু বিচলিত হলেন না। বরং বললেন— “ভগিনী, তুমি গুরুকন্যা। তাই আমি তোমাকে অস্বীকার করছি। গুরুদেবও আমাকে বিবাহের কোনো নির্দেশ দেন নি। আমি তোমাকে আমার ঋষিধর্মের কথা বলেছি। তারপরও যদি তুমি আমাকে অভিশাপ দাও, তাহলে আমি বলব, আমি তোমার শাপের যোগ্য নই।”
কচের এই কথার পরেও দেবযানী নিজের সিদ্ধান্তে অটল রইলেন। তখন কচ বললেন- “তুমি আমায় ধর্মানুসারে নয়, কামবশত এই অভিশাপ দিয়েছো। আমিও তোমায় বলছি তোমার কামনা কখনো সফল হবে না। আমিও তোমায় বলে যাচ্ছি, কোনো ব্রাহ্মণ কুমার কখনো তোমার পাণিগ্রহণ করবে না। আর আমি যদি এই বিদ্যা প্রয়োগে সফল না-ও হই, তাতেও আমার কোন দুঃখ নেই। কারণ আমি যাকে এই বিদ্যা শেখাব সে তো সফল হবে।”
এই কথা বলে কচ গুরুগৃহ ত্যাগ করে স্বর্গে চলে গেলেন। সেখানে দেবতাগণও গুরু বৃহস্পতি পুত্র কচকে অভিনন্দিত করলেন। তাঁরা কচকে এরপর যজ্ঞের ঋত্বিক নির্বাচন করলেন এবং যশস্বী হওয়ার বর দিলেন।
0 Comments