মহাভারতের পৌরাণিক কাহিনীর ধারাবাহিকতায় আজকের পর্ব :👉🏃‍ 👹👹👹সাবিত্রীর কাহিনী 👹👹

মহাভারতের পৌরাণিক কাহিনীর ধারাবাহিকতায় আজকের পর্ব :👉
🏃‍ প্রতিদিন সন্ধ্যায় একটি করে পৌরাণিক কাহিনী পোস্ট লাইক ও শিয়ার করুন🙏
👹👹👹সাবিত্রীর কাহিনী 👹👹
✍✍✍✍✍✍✍✍✍✍
আব্দুল মুসরেফ খাঁন// পাঁশকুড়া
✍✍✍✍✍✍✍✍✍✍✍

যুধিষ্ঠির মার্কণ্ডেয় ঋষিকে জিজ্ঞাসা করলেন— মুনিবর! দ্রৌপদীর জন্য আমার খুব দুঃখ হয়, কারণ আমার বা আমাদের ভাইদের কারণে তাকে বহু অপমান, লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়েছে। পাশা খেলার সময় আমরা যখন চরম সঙ্কটে পড়েছিলাম, তখন যাজ্ঞসেনী আমাদের রক্ষা করেছিলেন। দুরাত্মা জয়দ্রথ যখন তাঁকে হরণ করে, সেই বিপদকালেও তিনি মনে মনে আমাদের স্মরণ করেছিলেন হে মহর্ষি! আপনি দ্রুপদ কন্যার ন্যায় আর কোনো রমণীকে জানেন যিনি, তাঁর সঙ্গে তুলনীয়া, সমান পতিব্রতা ?
মার্কণ্ডেয় বললেন- “মহারাজ! এখন আমি রাজকন্যা সাবিত্রীর জীবন কথা শোনাব, যিনি দ্রৌপদীর সঙ্গে তুলনীয়া এবং সমান পতিব্রতা।
মদ্রদেশে অশ্বপতি নামে ধর্মপ্রাণ, সত্যাশ্রয়ী, জিতেন্দ্রিয় এবং দানশীল এক রাজা ছিলেন। তাঁর সন্তানাদি ছিল না। এদিকে রাজার বয়স হচ্ছিল। সন্তানহীনতার কারণে তাঁর মনে সুখ ছিল না। সন্তান লাভের আশায় তিনি, পরিমিত আহার, ব্রহ্মচর্য এবং ইন্দ্রিয়াদির অনুশাসন মেনে চলছিলেন। সেই সঙ্গে সাবিত্রী দেবীর উদ্দেশে হোম-যজ্ঞ শুরু করলেন। প্রতিদিন এক লক্ষ আহুতি দিয়ে দিনের ষষ্ঠ ভাগে যৎকিঞ্চিৎ আহার গ্রহণ করে তিনি দিনাতিপাত করতে লাগলেন। এভাবে আঠারো বৎসর অতিক্রান্ত হলো। সাবিত্রী দেবী একদিন প্রসন্না হলেন। দিব্য শরীরে অগ্নিহোত্র থেকে উঠে অশ্বপতির মানস চক্ষে আবির্ভূতা হয়ে বললেন- “মদ্ররাজ! আমি তোমার ভক্তি, নিষ্ঠা ও জীবনচর্যায় খুশি হয়েছি। তুমি এখন মনোমত বর প্রার্থনা করো।” রাজা অশ্বপতি বললেন— “দেবী! প্রাচীনেরা বলেন সন্তানই পরম ধর্ম। সেই কথাকে মাথায় রেখে সন্তান লাভের আশায় আমি আপনার আরাধনা করে চলেছি। যদি আপনি আমার প্রতি প্রসন্না হন, তাহলে আমাকে বহুসংখ্যক পুত্রলাভের বর দিন।”
দেবী সাবিত্রী বললেন— “হে রাজা! আমি তোমার এই প্রার্থনা আগে থেকেই জানতাম ৷ তোমার সন্তান প্রাপ্তির জন্য পিতামহকে বলেছিলাম। তাঁর আশ্বাস অনুসারে শীঘ্রই তোমার এক তেজস্বিনী কন্যা লাভ হবে।” রাজা তখন দেবী সাবিত্রীকে প্রণাম জানালেন এবং দেবী তখনই অন্তর্হিতা হলেন। অল্পদিন পরে রাজমহিষী গর্ভবতী হলেন। তারপর নির্দিষ্ট সময়ে রাজমহিষী এক কমলনয়না, সুলক্ষণা কন্যা প্রসব করলেন। রাজা তখন খুশি মনে কন্যার জাতকর্ম করালেন। দেবী সাবিত্রীর কৃপায় তিনি কন্যার মুখ দেখতে পেয়েছেন বলে কন্যার নাম রাখলেন সাবিত্রী। এরপর রাজনন্দিনী-সাবিত্রী মূর্তিমতী লক্ষ্মীর মতো আদর ও যত্নে ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলেন। এবং একসময় যৌবন সীমায় পৌঁছালেন। তাঁর রূপলাবণ্য এতই আকর্ষণীয় ছিল যে, তাকে দেবকন্যার মতো দেখতে লাগতো। তাঁর তেজস্বিতা এবং ব্যক্তিত্ব এত প্রবল ছিল যে, কোনো পুরুষ তাঁর কাছে ঘেঁষতে পারতো না।
একদিন অন্যান্য দিনের মতো স্নান, পূজার্চনা এবং অগ্নিতে আহুতি দিয়ে কন্যা সাবিত্রী পিতার কাছে গেলেন। তাঁকে প্রণাম করে তাঁর পাশে দাঁড়ালেন। পিতা অশ্বপতি কন্যরা দিকে এক নজর তাকিয়ে চিন্তা করলেন যে, মেয়ে আমার বিবাহযোগ্যা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউই তাকে বিয়ের ইচ্ছা দেখায় নি।
তিনি তখন কন্যাকে বললেন- “বৎসে! তোমাকে সম্প্রদানের সময় হয়েছে। কিন্তু আমাকে তোমার বিয়ের ব্যাপারে কেউ কিছু বলে না। তাই আমার ইচ্ছা তুমি তোমার মনোমত স্বামী নিজে নির্বাচন করে নাও। যাকে তোমার পছন্দ হবে, আমার সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেবে। আমি তখন সব দিক বুঝে শুনে তোমাকে সম্প্রদান করবো।
শাস্ত্রমতে যে পিতা কন্যাকে সম্প্রদান করে না, যে পুরুষ বিবাহ না করে অবিবাহিত থাকে এবং যে ব্যক্তি বিধবা মায়ের ভরণ-পোষণ বা দেখাশুনা করে না— এই তিন ধরনের ব্যক্তিই নিন্দনীয়। তাই আমার ইচ্ছা তুমি স্বামী নির্বাচনে প্রয়াসী হও, যাতে আমি দেবতাদের কাছে নিন্দনীয় না হই।'
রাজা অশ্বপতি কন্যাকে এমন উপদেশ দিয়ে বৃদ্ধ মন্ত্রীদের বললেন- “আপনারা আমার কন্যার সঙ্গে যাত্রা করবেন।”
সাবিত্রী তখন বেশ লজ্জিত হলেও পিতার আদেশ পালনের জন্য হৈম রথে চড়ে সেখান থেকে যাত্রা শুরু করলেন। প্রথমে তিনি বেশ কিছু সুন্দর সুন্দর স্থানে গেলেন যেখানে, রাজর্ষিরা বেড়াতে যান। তারপর তিনি অনেক ছোট ছোট অরণ্য, জনপদ অতিক্রম করে তীর্থে তীর্থে গমন করলেন। ব্রাহ্মণ-মুনি-ঋষিদের দান ধ্যান করতে লাগলেন।একদিন মদ্ররাজ রাজসভায় বসে মহর্ষি নারদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন, তখন কন্যা সাবিত্রী মন্ত্রীদের সঙ্গে নিয়ে পর্যটন শেষ করে পিতার সামনে এসে দাঁড়ালেন। তারপর ঋষিবর এবং পিতা অশ্বপতিকে প্রণাম করলেন। তখন মহর্ষি নারদ জিজ্ঞাসা করলেন- “রাজন। আপনার কন্যাটি কোথা থেকে এলো ? কন্যাটি তো বেশ বড় হয়েছে। তবুও কেন তার বিয়ে দিচ্ছেন না ?'
অশ্বপতি বললেন— “মহর্ষি ! আমি তাকে সৎপাত্র খোঁজার জন্য পাঠিয়েছিলাম। এখন এ কাজ কতখানি এগিয়েছে, তা তার মুখেই শুনুন। তারপর অশ্বপতি সাবিত্রীকে বললেন— “কন্যা! তোমার কথা বলো।”
সাবিত্রী তখন বললেন- “পিতা শাল্বদেশে দ্যুমৎসেন নামে একজন ধর্মাত্মা রাজা ছিলেন। দৈব দুর্বিপাকে পড়ে তিনি একসময় অন্ধ হয়ে যান। তিনি অন্ধ হওয়ায় এবং তাঁর পুত্র বালক হওয়ার সুযোগ নিয়ে তাঁর পূর্ব শত্রু প্রতিবেশী এক রাজা তাঁর রাজ্যটি পরে দখল করে নেন। রাজা তখন বালক পুত্র এবং সহধর্মিণীকে সঙ্গে নিয়ে বনে চলে যান। বর্তমানে তিনি ব্রত-জপ-তপস্যা ইত্যাদির সাহায্যে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের একমাত্র পুত্র সত্যবান এখন যৌবনপ্রাপ্ত হয়েছে। তিনিই আমার যোগ্য বলে আমি মনে করি। তাঁকেই আমি মনে মনে পতিরূপে বরণ করেছি।”
তখন নারদ অশ্বপতিকে বললেন- “হে নরপতি! তোমার কন্যা বিশেষ কিছু না বুঝে সত্যবানকে বরণ করে ভুল কাজ করেছে। সত্যবানের পিতামাতা অত্যন্ত সত্যপ্রিয়। ব্রাহ্মণরা তাই তার নাম দিয়েছে 'সত্যবান' । বাল্যকালে সত্যবান খুব অশ্বপ্রিয় ছিল। সে মাটি দিয়ে ঘোড়া বানাতো। ফলকে অশ্বের ছবি আঁকতো। তাই অনেকে তাঁকে 'চিত্রাশ্ব' বলেও ডাকতো।”
রাজা বললেন- “মুনিবর। সত্যবান সদ্গুণ-সম্পন্ন তো ?”
নারদ বললেন, সত্যবান সূর্যের ন্যায় তেজস্বী, বৃহস্পতির মতো বুদ্ধিমান, ইন্দ্রের
ন্যায় বলশালী এবং বসুধার ন্যায় ক্ষমাপরায়ণ। সত্যবান রন্তিদেবের ন্যায় দানশীল, উশীনর-তনয় শিবির মতো ব্রহ্মনিষ্ঠ ও সত্যবাদী, যযাতির ন্যায় উদার ও অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের ন্যায় রূপবান।
রাজা অশ্বপতি আবার প্রশ্ন করলেন— “মহর্ষি! সত্যবানের সব কিছুই তো প্রশংসনীয়, তাহলে তার কি কোন দোষ নেই ?”
নারদ বললেন— “রাজন। সত্যবানের একটি মাত্র দোষ, যা তার সকল গুণকে
ঢেকে দেয়, তা হলো সত্যবানের স্বপ্নায়ুতা। আজ থেকে ঠিক এক বছর পরে সত্যবানের অকাল মৃত্যু হবে।”
নারদ মুনির এই অমোঘ বাক্য শুনে রাজা অশ্বপতি সাবিত্রীকে বললেন— “সাবিত্রী! তুমি অন্য কাউকে পতি নির্বাচন কর। মহর্ষি নারদ এইমাত্র বললেন যে, সত্যবানের পরমায়ু আর মাত্র একবছর সাবিত্রী বললেন- “কাঠ বা পাথরের টুকরো একবারই পৃথক হয়। কন্যাকে একবারই সম্প্রদান করা যায়, 'আমি সম্প্রদান করলাম'-এমন সংকল্প একবারই করা হয়। আমি যাঁকে পতি হিসাবে বরণ করেছি, তিনি স্বল্পায়ু অথবা দীর্ঘায়ু, রূপবান কিংবা গুণহীন— তা আর বিবেচ্য নয়। তিনিই আমার স্বামী। আমি অন্য কাউকে আর পতিরূপে গ্রহণ করতে পারব না।
প্রথমে মানে মানে স্থির করা হয়, তারপর তা বলা হয় এবং সেইভাবে তা সম্পাদিত হয়। তাই আমার কাছে আমার মনন বা চিন্তাই একমাত্র সত্য। '
তখন নারদ মুনি বললেন, মদ্ররাজ তোমার কন্যা অত্যন্ত স্থিরমতি। তাকে ধর্মপথ থেকে সরিয়ে আনা সম্ভব নয়। সত্যবান সর্বগুণ-সম্পন্ন। তাই তুমি সত্যবানকে কন্যা সম্প্রদান করো ।
নারদ মুনির বিধান পেয়ে মদ্ররাজও কন্যার বিয়ের আয়োজন শুরু করলেন। এরপর বিধি নির্দিষ্ট দিনে ব্রাহ্মণ, ঋত্বিক সহ অন্যান্যদের সঙ্গে নিয়ে পায়ে হেঁটে তিনি বনের মধ্যে দ্যুমৎসেনের কুটিরে উপস্থিত হলেন। দেখলেন দ্যুমৎসেন একটি বিশাল শালগাছের নীচে কুশাসনে বসে আছেন।
রাজা অশ্বপতি তখন নিজের পরিচয় দিয়ে রাজর্ষিকে অভিবাদন জানালেন। রাজা দ্যুমৎসেন তখন মদ্ররাজকে পাদ্য, অর্ঘ ও আসন দিয়ে সম্মাননা জ্ঞাপন করলেন। জিজ্ঞাসা করলেন— “রাজন। দয়া করে বলুন, কি কারণে এই কুটিরে পদার্পণ করেছেন ?”
রাজা অশ্বপতি বললেন- “সাবিত্রী আমার রূপবতী, সর্বগুণসম্পন্না একমাত্র কন্যা। তাকে ধর্মানুসারে আপনার পুত্রবধূ হিসাবে স্বীকার করুন।”
দ্যুমৎসেন বললেন— “আমি রাজ্যপাট হারিয়ে তপস্বীর জীবন পালন করছি। আপনার কন্যা এই কষ্টসাধ্য জীবন মেনে নিতে পারবে তো ?”
অশ্বপতি বললেন— “রাজন। আমি এবং আমার কন্যা সংযত জীবন মেনে চলি । সুখ, দুঃখ আমাদের কাছে কোন বিপরীত অনুভূতি দেয় না। আমি এবং আমার কন্যা সব জেনে শুনে মনস্থির করেই এখানে এসেছি।”
দ্যুমৎসেন বললেন- “হে রাজা! এই বৈবাহিক সম্বন্ধের ইচ্ছা আমার আগে থেকেই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে রাজ্যচ্যুত হওয়ার পর আমি সেই আশা ত্যাগ করি ৷ আজ বিধির ইচ্ছায় আপনি যখন আমার কুটিরে পদার্পণ করেছেন, তাহলে আমার আগের ইচ্ছাটি সফল হোক। এখন থেকে আমরা পরস্পর একান্ত আপনজন, শ্রদ্ধাভাজন-অতিথি।”
তারপর সকল আশ্রমবাসী এবং আগত ব্রাহ্মণ ও অন্যান্য গুণীজনদের উপস্থিতিতে শাস্ত্রসম্মত নিয়ম মেনে সত্যবান ও সাবিত্রীর বিবাহকার্য সুসম্পন্ন হলো। বিবাহ শেষে রাজা অশ্বপতি রাজধানীতে ফিরে গেলেন। সর্বগুণময়ী স্ত্রীকে পেয়ে সত্যবান খুবই
হলেন। সাবিত্রীও মনোমত পতিলাভ করে আনন্দিত হলেন। এরপর সাবিত্রী সমস্ত আভরণ ও মূল্যবান বস্ত্রাদি ত্যাগ করে গেরুয়া বসন পরে নিলেন। সন্ন্যাসিনীর জীবন শুরু করলেন। তাঁর সেবা, যত্ন, জপ, তপস্যা, আন্তরিকতা এবং সাংসারিক কাজে আত্মস্থ হওয়া দেখে সকলে অবাক হয়ে গেলেন । শীঘ্রই শ্বশুর-শাশুড়ির নয়নের মণি হয়ে উঠলেন তিনি। অন্যদিকে কর্মদক্ষতা, মিষ্ট কথাবার্তা ও অন্যান্য কুশলতায় অচিরেই স্বামীর মনও জয় করে নিলেন পতিব্রতা সাবিত্রী ।
নবদম্পতির আনন্দময় দাম্পত্য জীবন বেশ চলছিল। হঠাৎ একদিন সাবিত্রী দেখলেন যে, তাঁর স্বামীর মৃত্যুদিন ঘনিয়ে আসছে। তিনি তখন দিন, প্রহর এমন কি প্রতিটি মুহূর্ত গুনছেন। যখন মৃত্যুর আর চারদিন মাত্র বাকি; তখন পতিব্রতা সাবিত্রী তিনদিনের ব্রত পালন করলেন। দিনরাত একাগ্রচিত্তে স্থির হয়ে বসে রইলেন।
এই ব্রত উদ্যাপনের সংকল্প শুনে শ্বশুর দ্যুমৎসেন অত্যন্ত বিমর্ষ চিত্তে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন— “পুত্রি! তুমি এক অসম্ভব ব্রত উদ্যাপনার সিদ্ধান্ত নিয়েছো। তিনদিন একটানা উপবাস করে এমন ব্রত কেউ পালন করেছেন, তা আমার জানা নেই।
সাবিত্রী বললেন- “পিতা! অযথা চিন্তা করবেন না। আমি এই ব্রত পালন করতে পারবো। আমি জানি, এই সংকল্পের মূল শক্তি হলো আত্মবিশ্বাস এবং অধ্যবসায়, যা আমার মধ্যে বর্তমান।”
“তাহলে তুমি এই ব্রত থেকে বিরত হও।”—এমন কথা বলতে পারি না। “ভগবান তোমার সহায় হোন।” –এই বলে রাজা দ্যুমৎসেন প্রস্থান করলেন। এদিকে সাবিত্রী খুবই দুর্বল ও কৃশ হয়ে পড়েছেন। প্রতিটি মুহূর্ত তিনি উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে কাটাচ্ছেন। যেদিন জানলেন, আগামীকাল তাঁর প্রাণনাথ তাঁকে ছেড়ে চিরকালের মতো চলে যাচ্ছেন; সেই রাতটি তাঁর কাছে খুবই অসহনীয় লাগছিল। তারপর যখন প্রভাত হলো, তিনি মনে মনে চিন্তা করলেন আজ সেই দিন। হোমাগ্নি জ্বালিয়ে তিনি আহুতি প্রদান করলেন। তারপর প্রভাতের পূজার্চনা শেষ করে প্রাজ্ঞ ব্রাহ্মণগণ ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে প্রণাম করে হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে রইলেন।
তখন তপোবনবাসী সকলে তাঁকে আশীর্বাদ করে বললেন— “তোমার বৈধব্য দূর হোক।”
ধ্যানময়ী সাবিত্রী মনে মনে বললেন- “তাই হোক। আপনারা আমাকে সেই আশীর্বাদ করুন।”
তাঁর শ্বশুর-শ্বাশুড়ী তখন তাঁকে একান্তে ডেকে বললেন— “মা, যেমন শ্রদ্ধা ভক্তি দিয়ে ব্রত পালন করতে হয়, তুমি সেভাবেই সব কিছু করলে, এখন আহার করে ব্রত ভঙ্গ করো।”
সাবিত্রী বললেন- “আমি স্থির করেছি সূর্য অস্ত না হওয়া পর্যন্ত আমি আহার গ্রহণ করবো না।”
শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর সঙ্গে সাবিত্রীর কথাবার্তা হচ্ছে, এমন সময় সত্যবানকে দেখা গেল তিনি কাঁধে একটি কুঠার নিয়ে বনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তা দেখে সাবিত্রী সত্যবানকে বললেন- “আজ একা একা তোমার বাইরে বেরোনো ঠিক নয়। আমি তোমার সঙ্গে বনে যাব।”
সত্যবান বললেন- “তুমি কখনো বনে যাওনি। বনের পথ বেশ কষ্টকর। তুমি ব্রতোপবাস করে দূর্বল হয়ে পড়েছো। পায়ে হেঁটে কিভাবে যাবে ?”
সাবিত্রী বললেন- “উপবাস করলেও আমি তেমন দুর্বল হইনি। আমি যেতে চাই। তুমি আমায় বাধা দিও না।”
সত্যবান বললেন- “বেশ! যখন চাইছো, আমি আর 'না' করব না। কিন্তু তোমাকে আমার মা-বাবার অনুমতি নিতে হবে। না হলে তারা আমাকে দোষ দেবেন।”
সাবিত্রী তখন শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে প্রণাম করে বললেন- “আপনার ছেলে সামান্য কিছু ফলমূল মুখে দিয়ে জঙ্গলে যাচ্ছে। এদিকে আমার মন কিছুতেই স্থির হচ্ছে না। আপনারা আমাকে তাঁর সঙ্গে যেতে দিন। উনিতো অগ্নিহোত্র এবং আমাদের প্রয়োজনে বনে যাচ্ছেন। তাই তাঁকে আটকানো ঠিক নয়। আর এক বছর আমার বিয়ে হলো, আমি আশ্রমের বাইরে কখনো বেরোই নি। আমার চারদিকটা ঘুরে দেখতে খুব ইচ্ছা করছে।”
দ্যুমৎসেন বললেন- “বৎসে। তোমার বিয়ের পর তুমি আজ পর্যন্ত কোনো আবদার করোনি। তাই এ ক্ষেত্রে তোমাকে যেতে বারণ করছি না। তবে সবসময় সত্যবানের প্রতি খেয়াল রেখো।”
এরপর সাবিত্রী এবং সত্যবান উভয়ে বনের উদ্দেশে রওনা দিলেন। বনে গিয়ে সাবিত্রী নানা রকম ফল সংগ্রহ করছিলেন। অন্যদিকে সত্যবান কুঠার দিয়ে কাঠ কাঠছিলেন। একটানা কাঠ কাটতে কাটতে তিনি হঠাৎ পরিশ্রান্ত বোধ করলেন। তখন প্রিয়তমাকে বললেন— “সাবিত্রী! আমার হঠাৎ মাথা-যন্ত্রণা করছে। শরীর যেন কেমন অবশ হয়ে আসছে, আমি দাঁড়ানোর শক্তি পাচ্ছি না। তাই এখন আমার একটু ঘুমাতে ইচ্ছা করছে।'
পতিব্রতা সাবিত্রী তখন মাটিতে বসে, স্বামীর মাথাটি কোলে নিয়ে তাঁকে ঘুমাতে বললেন। এবং নারদমুনির বচন অনুসারে মৃত্যুর সেই দিন, ক্ষণ, বেলা, মুহূর্ত ইত্যাদি হিসাব করতে লাগলেন।
সামান্য পরে সাবিত্রী দেখলেন সূর্যের ন্যায় তেজস্বী, শ্যামবর্ণ, রক্তচক্ষু, ভয়ংকর এক পুরুষ পাশ হাতে নিয়ে সত্যবানকে নিরীক্ষণ করছেন। সঙ্গে সঙ্গে সাবিত্রী পতির মাথাটি সাবধানে মাটিতে রেখে উঠে দাঁড়ালেন। হাতজোড় করে বললেন- “হে দেবেশ! আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো দেবতা। দয়া করে বলবেন, আপনি কেন
এখানে এসেছেন ?
আগন্তুক বললেন- “হে সাবিত্রী! আমি যম। আজ তোমার স্বামী সত্যবানের আয়ু ফুরিয়ে গেছে। আমি তাকে বেঁধে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছি।
সাবিত্রী বললেন- “হে ভগবন। শুনেছি আপনার দূতেরাই এই কাজটি করেন। তাহলে আপনার আসার কারণ কী
তখন যমরাজ বললেন- “সত্যবান একজন পরম ধার্মিক, গুণবান ও সদাচারী পুরুষ। তাঁকে দূতেরা নিয়ে গেলে তাঁর প্রতি খুব অন্যায় হয়। তাই আমি স্বয়ং তাঁকে নিতে এসেছি।”
এই বলে যমরাজ সত্যবানের দেহ থেকে দড়িতে বাঁধা এক আঙুলের মত পুরুষকে জোর করে টেনে বের করলেন। সঙ্গে সঙ্গে সত্যবান নিষ্প্রাণ এবং নিষ্প্রভ হয়ে গেলেন। এরপর সেই আঙুল-সমান পুরুষটিকে পাশবদ্ধ করে তিনি দক্ষিণ দিকে চললেন।
তা দেখে পতিপ্রাণা ভক্তিমতী-সাবিত্রী তাঁর সঙ্গে সঙ্গে চললেন। কিছুদূর যাওয়ার পর যমরাজ যখন দেখলেন, সাবিত্রী তাঁর অনুগমন করছেন, তিনি বললেন— “সাবিত্রী! স্থির হও। তোমার স্বামী সত্যবান তোমার সঙ্গে ইহলোকের সম্পর্ক শেষ করেছেন। এখন তুমি তার প্রতি মায়া না দেখিয়ে ঘরে ফিরে যাও।”
সাবিত্রী বললেন— “আমার স্বামীকে যেখানে নিয়ে যাওয়া হয়, বা তিনি নিজে যেখানে যান, আমারও সেখানে যাওয়া কর্তব্য। এটাই স্বাভাবিক ধর্ম ।
হে মহাত্মন! তপস্যা, গুরুভক্তি, স্বামীর স্নেহ, ব্রত এবং সবার উপর আপনার আশীর্বাদে আমার গতি অপ্রতিহত হয়েছে।
যাঁরা জিতেন্দ্রিয় নন, তাঁরা বনে এসে গার্হস্থ্য, ব্রহ্মচর্য বা সন্ন্যাস ব্রত করেন না। শুধুমাত্র জিতেন্দ্রিয়েরাই আশ্রম ধর্ম পালন করেন। তার মধ্যে গার্হস্থ্য ধর্মের দ্বারা জ্ঞান প্রাপ্তি হয়। আশ্রমিকরা এই ধর্মের মধ্যে দিয়ে জ্ঞান লাভ করেন। তাই আমার মতো জিতেন্দ্রিয় রমণীরা আশ্রমে থেকেই জ্ঞানচর্চা করে এবং আমিও তাই করছি।”
যমরাজ বললেন “হে অনিন্দিতা। তোমার কথা আমাকে খুশি করেছে। আর কথা না বাড়িয়ে সত্যবানের জীবন ছাড়া অন্য কোন বর প্রার্থনা কর।”
সাবিত্রী বললেন- “আমার শ্বশুর রাজ্য হারিয়ে এবং অন্ধ হয়ে অরণ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আপনার প্রাসাদে তিনি যেন হারানো চোখ এবং অগ্নি-ভাস্করের সমান শক্তি লাভ করেন।
- “বেশ তোমার প্রার্থনা মেনে নিলাম। তিনি চোখ ও শক্তি ফিরে পাবেন। দেখছি, তুমি খুবই পথশ্রান্ত। এখন বাড়ি ফিরে যাও। না হলে তোমার আরও- “হে ধর্মরাজ। আমি যখন স্বামীর সঙ্গে রয়েছি; তাই স্বামীই আমার অভিমুখ, গতি এবং শক্তি। তাই আপনি যেমন পাচ্ছেন, চলুন। আমি আরও দু- চার কথা বলছি, মন দিয়ে শুনুন। শাস্ত্রে বলে সাধুসঙ্গ করলে মিরতা হয়। সাধুসঙ্গ কখনো নিষ্ফল হয় না। তাই আমাকে সাধুসঙ্গ করতে দিন।"
যমরাজ বললেন- “বুঝলাম, যুক্তি ও বাক্যবিন্যাসে তুমি আবার আমাকে মুগ্ধ করেছো। তাই সত্যবানের বর ছাড়া আর কোন প্রার্থনা থাকলে করে ফেলো।”
স্বধর্মচ্যুত না হন। সেই বর দিন।” সাবিত্রী বললেন- “আমার শ্বশুরের হারানো রাজ্য ফিরিয়ে দিন। 
যমরাজ বললেন— “রাজা দ্যুমৎসেন অচিরেই নিজের রাজ্যে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবেন। তিনি কখনো স্বধর্মচ্যুত হবেন না। আমি সেই বর দিলাম। আর কথা নয়। তুমি এবার বাড়ি ফিরে যাও।”
সাবিত্রী বললেন— “হে দেব! আপনি হলেন সকল কামনার মূল। কামনার কারণেই মানুষের এত দুঃখ-দুর্দশা। হে যমরাজ! আপনি একথা স্বীকার করবেন যে, সাধুগণের ধর্ম হলো মন প্রাণ দিয়ে দান ও অনুগ্রহ বিতরণ। জগতে সকলেই ভক্তিপ্রবণ। সজ্জন ব্যক্তি শত্রুকে দয়া করতে কুণ্ঠা বোধ করেন না।”
যমরাজ বললেন— “হে শুভে। পিপাসু ব্যক্তির কাছে পানীয় যেমন, তোমার মধুর বচনও আমার কাছে ঠিক তেমন। তাই সত্যবানের জীবন ভিন্ন আর কোনো প্রার্থনা থাকলে করে ফেল।”
সাবিত্রী বললন— “আমার পিতার কোনো সন্তান-সন্ততি নেই। তিনি যেন শতপুত্রের জনক হন। এটি আমার তৃতীয় প্রার্থনা।”
যম বললেন- “হে ভদ্রে। তোমার পিতার বংশধর হিসাবে তেজবান এক শত পুত্রের জন্ম হবে। এবার বাড়ি ফিরে যাও। তুমি বহু দূর চলে এসেছো।
সাবিত্রী বললেন- “হে ঈশ্বর। আমি যখন আমার স্বামীর সঙ্গে আছি, তখন পথ- দূরত্ব আমার কোন সমস্যাই নয়। আমার মন এর চেয়ে বহু দূর দেশে পাড়ি দিয়েছে। আপনি যেতে যেতে তা শ্রবণ করুন।
আপনি ভগবান বিবস্থানের পুত্র, তাই পণ্ডিতগণ আপনাকে বৈবস্বত বলে থাকেন। ইহলোকে সকল মানুষ আপনার পক্ষপাতশূন্য ধর্মশাসনে বাস করছে। তাই তো আপনার আর একটি নাম হলো ধর্মরাজ। কিন্তুসাধু ব্যক্তিকে যতখানি বিশ্বাস করা যায়, ততখানি বিশ্বাস আপনার প্রতি নয়। তাই সকলে সাধুব্যক্তিদের উপর বিশ্বাস ও মিত্রতা স্থাপনে অধিক আগ্রহী।”
যম বললেন- “হে অনিন্দিতা। তুমি যা বললে এমন কথা আর কারোর কাছে কোনদিন শুনিনি। তোমার কথায় আবার খুশি হলাম। তুমি সত্যবানের জীবন ছাড়া আর কিছু চাওয়ার থাকলে চাইতে পারো
সাবিত্রী বললেন— “সত্যবানের ঔরসে আমার গর্ভে বলবীর্য সম্পন্ন, বংশের মুখ উজ্জ্বলকারী একশত সন্তানলাভের বর দিন।
যম বললেন- “হে অবলে! তোমার অসীম বলশালী, আনন্দবর্ধক একশত সন্তান লাভ হবে। এখন নিবৃত্ত হও। আর পথশ্রম করে আমাকে অনুসরণ করো না।”
সাবিত্রী বললেন- “সজ্জন ব্যক্তির ধর্মাচরণ চিরকালীন, শাশ্বত। সজ্জনের সঙ্গে সজ্জনের মিত্রতা কখনো বিফলে যায় না। সজ্জনেরা সত্য দিয়ে সূর্যকে পরিচালিত করছেন। তাঁরাই তাঁদের তপস্যা দিয়ে পৃথিবীকে ধারণ করছেন। তাঁরাই আমাদের অতীত। তাঁরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাঁদের আশীর্বাদ, অনুগ্রহ কখনো বিফলে যায় না। তাঁদের কাছে অর্থ বা মান-সম্মান অতি তুচ্ছ বিষয়। তাই সাধুগণ এবং সাধুসঙ্গ আমাদের একমাত্র শরণ।”
যম বললেন- “হে পতিব্রতা! আমি তোমার ভক্তি ও ঐশী জ্ঞানে মুগ্ধ হয়েছি। তাই পুনরায় কোনো বর চাওয়ার থাকলে প্রকাশ করো সাবিত্রী পুনরায় বললেন- “স্বামীর ঔরসজাত পুত্র যেমন, ক্ষেত্রজ পুত্র তেমন নয়। তাছাড়া স্বামী ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না। তাই আমার প্রার্থনা সত্যবান জীবিত হোন। আমি স্বামীকে বাদ দিয়ে যে কোন সুখ, স্বর্গলাভ, সৌন্দর্যলাভ এমন কি জীবনধারণেও বিন্দুমাত্র আগ্রহী নই। আপনি আমাকে শত পুত্রের আশীর্বাদ করেছেন, আবার আপনিই আমাকে স্বামীহারা করছেন। তাই ধর্মরাজ সত্যবানের জীবন ফিরিয়ে দিন। না হলে আপনার আশীর্বাদ অসত্য হয়ে যাবে।”
ধর্মরাজ সাথিবীর যুক্তি এবং প্রায় আনন্দিত হয়ে বললেন- “ “তথাস্তা' আমি সত্যবানকে শাপমুক্ত করলাম। সত্যবান রোগমুক্ত থেকে এবং তোমার গুণমুগ্ধ হয়ে চারশ বছর বাঁচবে। ধর্ম পাচার দিয়ে খ্যাতিমান হবে। তার দ্বারা তোমার গর্ভে শহ পুত্র জন্ম নেবে। তারাও জীবনে সফল হবে। খ্যাতি ও যশের অধিকারী হবে। তোমার পিতা তোমার মাতা মালবীর গর্তে 'মাল' নামে ইন্দ্রের সমান এক কীর্তিমান পুত্র।
এই বলে সমাজ অনুষ্টিত হলেন। সাবিত্রীও যেন অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন। একটু পরে ধাতস্ত হতে ফুটলেন যেখানে তাঁর স্বামীর দেহ শায়িত আছেন। সেখানে গিয়ে দেখলেন সত্যবান এই মাত্র যেন নিয়া ত্যাগ করেছেন।
তুমি এতক্ষণ কোথায় ছিলে ? আমাকে আগে কেন ঘুম ভাঙিয়ে নাওনি। যিনি আমাকে টানাটানি করছিলেন সেই শ্যামল পুরুষটি কোথায় গেলেন ?”
সাবিত্রী বললেন- “হে নাথ, আপনি এতক্ষণ আমার সঙ্গেই ছিলেন। আপনি যে পুরুষের কথা বলছেন, তিনি হলেন বমরাজ। এই সামান্য আগে তিনি তাঁর স্থানে ফিরে গিয়েছেন। হে রাজপুত্র, আশা করি আপনার সামান্য হলেও কিছুটা বিশ্রাম হয়েছে। যদি গায়ে বল পান, তাহলে উঠে পড়ুন। দেখুন রাত্রি সমাগত-প্রায়। আগামীকাল আপনাকে সব ঘটনা খুলে বলবো। এখন বাড়ি চলুন। পিতা-মাতাকে দর্শন করুন
সত্যবান বললেন- “এখন আমি বেশ সুস্থ বোধ করছি। গায়ে বল পাচ্ছি। সাধারণত সন্ধ্যার আগেই আমি আশ্রমে ফিরে যাই। আশ্রমে ফিরতে দেরি দেখলে পিতা-মাতা আমার জন্য খুব চিন্তা করেন। অনেক সময় আমাকে খুঁজতে কোনো আশ্রমবাসীকেও পাঠিয়ে দেন। তাই আর বিলম্ব নয়। চলো, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা আশ্রমে ফিরে যাই। এই বলে সাবিত্রী ও সত্যবান তাড়াতাড়ি আশ্রম অভিমূখে এগিয়ে চললেন
সত্যবান-সাবিত্রীর কাহিনী কতখানি বাস্তবসম্মত তা মোটেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যে, স্বামীর জীবন রক্ষার জন্য তার স্ত্রীর এমন হার- না-মানা প্রচেষ্টা যা, ঘটনাটিকে শাশ্বত, চিরন্তন ও অমর করেছে। 
#পৌরানিক #পুরাণ #মহাভারত

Post a Comment

0 Comments