রেফারেন্স তথ্য :হজরত মুহাম্মদ স.
✍✍✍✍✍✍✍✍✍✍✍
প্রতি দিন এই রকম পোস্ট পড়তে ফ্লো - লাইক করুন👌
✍✍✍✍✍✍✍✍✍✍✍
আব্দুল মুসরেফ খাঁন//পাঁশকুড়া
✍✍✍✍✍✍✍✍✍✍
আল্লাহ্ তাঁর পবিত্র কোরআনে রসুল মুহাম্মদ স. সম্বন্ধে বলেছেন-
আপনি মহৎ চরিত্রের অধিকারী'। রসুল স. একমাত্র মানব যিনি বলতে পারেন আমার জীবনই আমার বাণী, তার সর্বপ্রধান নমুনা তিনি স্বয়ং। বাইরের জনসমাবেশে যা বলতেন করতেন, গৃহের নিভৃত কোণেও সেই আদর্শের নমুনা রেখে গিয়েছেন। কোরআন বলে, “লেমা তাকুলুনা মালা তাকুলুন।' এমন কথা বলবে না, যা তোমরা কর না।' তিনি যা কিছু বলতেন তা তিনি নিজে পালন করতেন। তাঁর এন্তেকালের পর তাঁর স্ত্রী আয়েষা রা. কে জিজ্ঞাসা করা হয় রসুল চরিত্র সম্বন্ধে আয়েষা রা. বলেন রসুল স-র চরিত্র ছিল জীবন্ত কোরআন।
তিনি কখনও নাম ধরে কাউকে অভিশাপ দেন নাই। কখন কোন দাসীকে, কোনও নারীকে এমন কি পশুকে পর্যন্ত প্রহার করেন নাই। কারো কোন আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন নাই। নাজায়েজ না হত। যখন গৃহে প্রবেশ করতেন মুখে হাসি লেগে থাকত। বন্ধু জনের মধ্যেও পা ছড়িয়া বসতেন না। কথাবার্তা অতি ধীরে ধীরে বলতেন।
হজরত হোসায়েন রা. কে তাঁর স্বভাব সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, তিনি হাস্য মুখ, নম্র স্বভাব ও দয়ালু প্রকৃতির লোক ছিলেন। কঠোর স্বভাব সংকীর্ণ হৃদয়ের মানুষ ছিলেন না। কথায় রব উচ্চ করতেন না। কোন কটু বাক্য মুখ দিয়ে বের হতো না। ছিদ্রান্বেষী ও ক্ষুদ্রমনা ছিলেন না। কোন আবদারে কেউ নিরাশ হতেন না। অপছন্দনীয় হলে প্রত্যাখ্যান না করে নীরব থাকতেন। বুদ্ধিমান ব্যক্তি উদ্দেশ্য বুঝে নিতেন। তিনটি বিষয় থেকে তিনি দূরে থাকতেন কূটতর্ক, প্রয়োজনাতিরিক্ত কথা, লক্ষহীন কোন কিছুর পিছনে ছোটা। কেউ কোন কথা বললে শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চুপ থাকতেন। যে কথায় মানুষ হাসত তিনিও সে কথায় মুচকি হাসতেন। লোকের মুখে নিজের প্রশংসা পছন্দ করতেন না। তাঁর উক্তি, 'কারো সামনে তার প্রশংসা করা তাকে হত্যা করার তুল্য।' তিনি ছিলেন উদার, অতীব সত্যবাদী ও নম্র স্বভাবের। তাঁর সাহচর্য ছিল মহোত্তম। এমন ব্যক্তিত্বপূর্ণ চেহারা ছিল যে, অকস্মাৎ দেখলে অন্তর কেঁপে উঠত। যতই ঘনিষ্ঠ পরিচয় হত ততই ভালবাসা দৃঢ় হত। কোন জিনিসকে খারাপ বলতেন না, কোন খাদ্যবস্তু সামনে হাজির হলে তা গ্রহণ করতেন। খারাপ বলতেন না। সত্যের বিরোধিতা করলে রেগে যেতেন। ব্যক্তিগত কাজে সহযোগিতা করতেন। কারো প্রতি প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি।
কারোর সঙ্গে সাক্ষাতে সর্বদা প্রথমে সালাম ও করমর্দন করতেন। হাত মিলাইলে যতক্ষণ না তিনি হাত ছাড়িয়ে নেন ততক্ষণ হাত ছাড়াতেন না। মজলিসে বসে হাঁটু সামনের দিকে ছড়াতেন না। দরিদ্র শ্রেণির লোক তাঁর কাছে নানা আর্জি নিয়ে হাজির হত। তাঁদের বিশ্বাস পানিতে তাঁর হাত পড়িলেই বরকতময় হয়ে উঠবে। শীতের দিনে পানি আনলেও তাদের নিরাশ করতেন না। বাদশাহ নাজজাসির দ্রুত এলে নিজের মেহমান হিসাবে গ্রহণ করে নিজ হাতে তাঁদের সেবা করেন। সাহাবীরা সেবা করতে চাইলে বলতেন, এরা আমার বন্ধুদের সেবা করেছে সুতরাং আমি
এদের সেবা করব।
→ ধৈর্য ও ক্ষমায় :
• কোরায়েসরা অশ্লীল গালাগালি দিয়াছে, হত্যা করার চেষ্টা করেছে, পবিত্র বদনে ময়লা নিক্ষেপ করেছে, গলায় ফাঁস লাগিয়েছে, নানাভাবে অপদস্থ করেছে। কখনও যাদুকর, কখনও পাগল, ব্যর্থ কবি বলেছে, তাঁকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করেছে রসুল স. থেকেছেন নীরব। ধৈর্যের প্রতীক তিনি। তিনি ত নবী। তিনি দয়ার আধার। তিনি ক্ষমাশীল। রসুল স. এর একমাত্র কুমারী স্ত্রী আয়েষার প্রতি চারিত্রিক অপবাদ দেওয়া হয়েছে। আয়েষা ছিলেন প্রিয়তম বন্ধু আবু বকরের কন্যা। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙা ছিল স্বাভাবিক। মোনাফেক সর্দার আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা ছিল অপপ্রচারের পাণ্ডা। কিন্তু উভয়েই ধৈর্য ধরলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে সাবাকে রসুল স. ক্ষমা করলেন। শুধু তাই নয় আব্দুল্লাহ সাবা মারা গেলে নিজের পরিধেয় পাঠিয়ে দেন কাফনের জন্য এবং পুত্রের অনুরোধে জানাজা পড়ান ৷
• ইয়ুদী থাকাকালীন জায়েদ ইবনে সাআদ টাকা ধার দিতেন। রসুল স. এর কাছে কিছু ঋণ করেন। একদিন তাগাদায় এসে রসুলের কাঁধের চাদর টেনে কটু কথা শুনিয়ে দিলেন। বংশ তুলে কথা বললেন। ওমর রা. দেখে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন। রসুল তাঁকে থামিয়ে জানালেন ওর কোন দোষ দিও না। তুমি এটা পরিশোধ করে দাও। এবং বিশ ছা বেশী খেজুর দিয়ে দাও। একদিন এক বেদুইন মদিনার মসজিদ এসে মসজিদে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা শুরু করল। সাহাবারা হৈ হৈ করে তাকে আক্রমণ করতে এগিয়ে এল। রসুল স. তাদের বাধা দিয়ে বললেন আগে তাকে প্রস্রাব শেষ করতে দাও। প্রস্রাব শেষ হলে এক বালতি পানি চেলে নিতে নির্দেশ দিলেন। বললেন, আল্লাহ তোমাদের পর মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে।
• একদিন এক কোইন এসে হঠাৎ কলের গায়ের চাদর ধরে টান নিয়ে ঘাড় ছিলে ফেলল। বলল, আমাকে দুই উট বোঝাই করে খাদ্য দাও। এ খাদ্য তোমার বা তোমার বাবার নয়। . বললেন, আগে আমার ঘাড় ছিলাইয়াছ তার বদলা দাও। সে রেগে গিয়ে বলল, আমি কিছুই দেব না। রসুল স. কুম দিলেন। বেদুইনের দুটি উটের পিঠে মন বোঝাই করে নাও। তোমাদের মধ্যে সে সেই পর্যন্ত পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারবে না সে পর্যন্ত সে অন্যের জন্য যা পছন্দ করে না নিজের জন্য করে। আর যে পর্যন্ত না আল্লাহ সন্তুষ্টির খাতিরে করে।
• এক ব্যক্তি শেষা করছিলেন আয় আল্লাহ আমাকে এবং মুহাম্মদ স.কে ক্ষমা কর। রসুল শুনে বললেন তুমি আল্লাহ ব্যাপক অনুগ্রহকে সংকুচিত কোরো না। পরিবারের সকলকে নিয়ে খেতেন। খেয়ে হাত ধুয়ে মাথায় বা তোয়ালেতে হাত মুছতেন। কোন দাওয়াত ফেরাতেন না। আহলে কেতাবদের দাওয়াতও নিতেন। মিয়াম অর্থাৎ শখ বলে ডাকত। এই ধরনের মোরামীর জন। নিবাসী থাকলে তাকে আগে খেতে বলতেন।
• রসুলকে নানাভাবে কোরাসেরা লাঞ্ছনা দিত। মোহাম্মদ অর্থ প্রদংশিত কিছু করে 'মোয়াম্মাম' পাগল তাদের ক্ষমা করে। বলতেন, মোয়াম্মাম নামে জনৈক ব্যক্তির প্রতি গালমন্দ বর্ষণ করে থাকে। কিন্তু আমি তো মুহাম্মদ।
→শিশুদের প্রতি
রসুল স. শিশুদের খুব ভালবাসতেন। দেখলেই আদরে কোলে তুলে নিতেন। মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করতেন। শিশুকে আহার করতে দিতেন। ঘোড়ার পিঠে থাকাকালিন তাদের পিছনে বসিয়ে নিতেন। হাসি তামাশা করতেন। মুহাম্মদ স. কোন পশুর লেজ কাটা, কেশরের পশম কাটা নিষেধ করেছেন। পিঠে গদি আঁটিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতেও নিষেধ করেছেন। জন্তু জানোয়ারকে বিছানা বা কুরসি মনে করো না। দুম্বার শরীরের খানিক অংশের গোস্ত কেটে নেওয়া হত তাও নিষেধ করেছেন। জন্তু জানোয়ার বেঁধে রেখে তীর নিক্ষেপ করে তাকে নিয়ে খেলা নিষেধ করেছেন।
• জন্তু জানোয়ার মুখে ছাপ দেওয়া নিষেধ করেছেন।
• পাখির বাসা থেকে এক সাহাবী ডিম তুলে আনে তাকে ততক্ষণাৎ নির্দেশ দেন ডিম রেখে আসতে।
• এভাবে একবার সাহাবীরা পাখির ছানা আনলে বাসায় রেখে আসতে বলেন। এ সকলের প্রতি ভালবাসা :
• তোমরা একে অপরের প্রতি হিংসা করিও না। একে অপর হতে মুখ ফিরিয়ে
যেত না। আল্লাহর বান্দার একে অপরের ভাই।
• তুমি নিজের জন্য যা পছন্দ কর। অন্য সকলের জন্য তাই পছন্দ কর। তবে পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারবে।
খেতে ভালবাসতেন। বেশী নরম, বেশী পদ পছন্দ করতেন না। খাবার শুকতেন না। কোন জিনিষ পছন্দ না হলে দোষারোপ না করে আহার থেকে বিরত থাকতেন। হেলান দিয়ে চেয়ারে ঠেস দিয়ে খেতেন না। আজীবন যবের রুটি খেয়েছেন। কখনও পেট ভরে আহার করেননি। ছাড়ও খেতেন। বাম হাতে খেলে তাকে বারণ করতেন। রসুল পেঁয়াজ একদম পছন্দ করতেন না। জোহরের নামাজের শেষ দুপুরের আহার করতেন। আহার করে একটু বিশ্রাম করতেন। মরসুমী ফল কেউ দিলে খুব খুশী হতেন। যেকোন খাবার ডান দিক থেকে পরিবেশন করতেন ও বাচ্চাদের আগে দিতেন।
রসুলের খাদ্য খাবার :
• রসূল স. চাপাটি রুটি খান নাই। পছন্দনীয় খাদ্য সিরকা, মধু, হালুয়া যয়তুন তেল, লাউ। উম্মে হানির গৃহে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কিছু খাবার আছে কি? ওম্মে হানি জানাল সিরকা আছে। ঘি-এর মধ্যে পনির ও খেজুর মিশিয়ে একপ্রকার খাবার হত এটা রসুল খুব ভালোবাসতেন খেতেন। ভুট্টা পিষে গরম পানিতে দিয়ে গুলে এবং ফুটন্ত তেলে সামান্য জিরা, গোলমরিচ, যয়তুন তেল দিয়ে খাদ্য প্রস্তুত হত রাসুল এটা খুব পছন্দ করতেন।
• দুম্বা, মুরগী, বাবুইপাখি, উট, ছাগলের গোশত পছন্দ করতেন। সামনের রানের গোস্ত পছন্দ করতেন।
• ছাফিয়ার সঙ্গে বিবাহে রসুল স. ওলিমায় শুধু খেজুর ও ছাতু পরিবেশন করেন।
• কোন কোন সময় রুটির সঙ্গে খেজুর খেয়েছেন।
→ জল ও সরবত
ঠান্ডা জল সব চাইতে পছন্দ করতেন। কোন কোন সময় দুধ, দুধের সঙ্গে পানি পান করতেন। কিশমিস, আংগুর, খেজুর ভেজান পানি পান করতেন।
পরিবারের সকলকে নিয়ে খেতেন। খেয়ে হাত ধুয়ে মাথায় বা তোয়ালেতে হাত মুছতেন। কোনও দাওয়াত ফেরাতেন না। আহলে কেতাবদের দাওয়াতও নিতেন। মজলিসে কমবয়সী সকলে একত্রে খেতে বসতেন। খরজুম ও খেজুর একত্রে খেতে ভালোবাসতেন। বেশি নরম বেশি পদ পছন্দ করতেন না। খাবার শুকতেন না। কোন জিনিষ পছন্দ না দোষারোপ না করে আহার থেকে বিরত থাকতেন। হেলান দিয়ে চেয়ারে ঠেস দিয়ে খেতেন না। আজীবন যবের রুটি খেয়েছেন। কখনও পেটভরে আহার করেননি। ছাতুও খেতেন। বাম হাতে খেলে তাকে বারণ করতেন। রসুন পেঁয়াজ একদম পছন্দ করতেন না। জোহরের নামাজের শেষে দুপুরের আহার করতেন। আহার করে একুট বিশ্রাম করতেন। মরসুমী ফল কেউ দিলে খুব খুশী হতেন। যে কোন খাবার ডান দিক থেকে পরিবেশন করতেন ও বাচ্চাদের আগে দিতেন। গদিতে টেবিলে কখনও বসে খান নাই। শুধু তিন আঙুল দ্বারা খানা খেতেন। গোশতের বড় টুকরো কখনও ছুরি দ্বারা কেটে খেতেন। পানের পাত্র ডান হাতে ধরতেন। ভালোভাবে থালা চেটে খেতেন। খেয়ে আলহামদোলিল্লাহ বলতেন।
→ পোষাক :
• রসুল কখনও জাঁকজমকপূর্ণ পোশাক পরতেন না।
• রেশমী কাপড় পরা জায়েজ নয় কিন্তু রেশমী কাজ করা পকেট ও দু'একবার করে পরের উপহারের দামী কাপড় পরে মর্যাদা রেখেছেন।
→ পছন্দনীয় রং :
• ধূসর রং সবচেয়ে অধিক পছন্দ করতেন। রসূল সমস্ত পোশাক এমনকি পাগড়ী পর্যন্ত ধূসর রঙে রাঙাতে পছন্দ করতেন।
সাদা রং খুব পছন্দ করতেন। বলতেন সমস্ত রঙের মধ্যে সাদাই সর্বোত্তম।
→ অপছন্দনীয় রং :
• লাল রং অপছন্দনীয় ছিল।
• এক ব্যক্তি লাল রঙের চশমা পরে তাঁর সামনে এসে সালাম দিলে সালামের জবাব দেন নাই।
→ সুগন্ধি
• সুগন্ধি অত্যন্ত পছন্দ করতেন। সুগন্ধ কোন দ্রব্য হাদিয়া স্বরূপ এলে ফেরত দিতেন না। ছেকতা নামক এক ধরনের আতর ব্যবহার করতেন। তিনি বলতেন পুরুষ মানুষের প্রসাধন এরকম হওয়া চাই তার রং ফুটবে না সুগন্ধ বিস্তার করবে। আর স্ত্রীলোকের প্রসাধনে রং দেখা যাবে সুগন্ধ বিস্তার না হয়। বাইহান মেশক ও আওদ-এর খশবু পছন্দ করতেন। মেহদীর ফুল তার সুগন্ধ পছন্দ করতেন। নামাজের পূর্বে, গোলসের পর রাতে খসরু ব্যবহার করতেন। কোনও খসবু দিলে খুশী হতেন।
→ যানবাহন
• ঘোড়ায় সওয়ার সর্বাধিক পছন্দ করতেন। এছাড়া গাধা খচ্চর ও উট সওয়ার হিসাবে ব্যবহার করতেন। রসুলের প্রিয় ঘোড়া ছিল 'লুহাইকা'। যে গাধা ব্যবহার করতেন তার নাম ‘উসাইর' এবং খচ্চরের নাম 'দুলদুল' এবং তাইয়া। ব্যবহারের উট দুইটির নাম কাসওয়া এবং আযহা।
→ শয়ন :
এশার নামাজ পড়ে শয়ন করতেন। আওয়াল ওয়াক্তে এশার নামাজ পড়তেন। শয়নের সময় বনি ইসরাইল, যোমারা, হাদীদ, হাসর, ছাবা, জুমা, তাগাবুন যেকোন একটি পাঠ করে ঘুমাতেন। পশ্চিমদিকে মাথা করে ঘুমাতেন। মাথার কাছে দাঁতন থাকত (বাবলা, খেজুর ডাল) দাঁত মেজে ওজু করে অর্ধরাত্রিতে এবাদতে লাগতেন। নিদ্রার সময় সামান্য গলার আওয়াজ শোনা যেত।
• বিছানা থাকত চামড়া চেটাই। মাটির ওপরও শুতেন।
→ পরিচ্ছন্নতা ও চিত্ত বিনোদনে :
রসূল স. পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব দিয়ে নিয়মিত গোসল করতেন। গোসল করতে সাধারণত: আড়াই সের (কিলো) পানি ব্যবহার করতেন। বাম হাত দিয়ে নাক পরিষ্কার করতেন। জুতা স্যান্ডেল বাম হাতে পরিষ্কার করতেন। প্রাকৃতিক প্রয়োজন মেটানোর পর বাম হাত দিতে পানি ব্যবহার করতেন। হাত মাটি দ্বারা পরিষ্কার করতেন। মাঝে মধ্যে বাগানে বেড়াতে যেতেন। ঘোড়ায় চাপা পছন্দ করতেন। গাধাও চাপতেন।
→ শ্রমিকের সঙ্গে ব্যবহার :
শ্রমিকের শক্তি সামর্থের বেশি ভার দিতে অপছন্দ করতেন। ঘাম শুকাবার আগে পারিশ্রমিক মিটিয়ে দিতেন।
→ জানাযায় অংশ গ্রহণ :
কোনও জানাযায় অংশ গ্রহণের পূর্বে জেনে নিতেন কোনও ঋণ আছে কিনা। থাকলে পরিশোধ করে দিতে সাহাবাদের বলতেন। ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা হলে তিনি তখন নিজেই জানাজা পড়াতেন।
→ আলাপ আলোচনায় :
কেউ কথা কইতে শুরু করলে কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে শুনতেন। তাঁর দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন। তারপর উপদেশ দিতেন সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা নিতেন। সাক্ষাতে প্রথমে সালাম দেবার চেষ্টা করতেন। বন্ধুদের থেকে হাদিয়ে নিতেন পরিবর্তে কিছু দেবার চেষ্টা নিতেন।
→ দিনের সূচী :
তাড়াতাড়ি নামাজ পড়ে সাহাবাদের বিদায় দিয়ে বাড়ি ফিরতেন। শোবার সময় বিছানা পাশে থাকত সুরমাদানি, চিরুনি, তেলের শিশি, কাঁচি, মেসওয়াক, আয়না, ছোট কাঠের টুকরো শরীর চুলকাবার জন্য। বদনা, পাগড়ী, তসবিহ। তাঁর বিছানা ছিল খেজুর পাতার তৈরি। মাঝে মাঝে তা দু-ভাঁজ করে নিতেন। ওজু অবস্থায় শুতেন। উপুড় হলে কিংবা চিৎ হয়ে শুতেন না। শোবার সময় ঘাড়ের নীচে হাতের তালু রাখতেন। কেবলামুখী হয়ে শুতেন। কিছু দোয়া কোরআনের আয়েত পড়তেন। ঘুমাবার পূর্বে পরিবারের লোকের সঙ্গে কথা কইতেন।
অর্থ রাত্রির পরে উঠে পড়তেন। তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন। ৪, ৬, ৮ বা ১২ রাকায়াত। ফজরে বেলালের আজানের পূর্বে বা পরে উঠে ওজু করে ফজরের দু-রাকায়াত সুন্নত পড়ে মসজিদে এসে নামাজ পড়তেন। সুন্নত নামাজে সুরা কাফেরুন দ্বিতীয় রাকাতে এখলাস। নামাজ পড়ে সাহাবীর সামনে তাকরীর করতেন।
এশরাক পড়ে বাড়ির দিকে পা বাড়াতেন। ওয়াক্ততিয়া নামাজ মসজিদে পড়তেন এবং এমামতি করতেন। সাহাবীদের সঙ্গে নিজে বাজারে যেতেন। ওয়াজ নসিহত করতেন। মক্কার জীবনে একাকী বাড়ি বাড়ি, বিভিন্ন গোত্রের কাছে নসিহত করতেন। মদীনা জীবনে সাহাবীদের নিয়ে বের হতেন।
→ সাহায্য প্রার্থীদের সঙ্গে :
সাহায্য প্রার্থীদের যথাসাধ্য সাহায্য করতেন। সাহায্যকারি সুস্থ সবল হলে তাকে সাহায্য করার পরামর্শ দিতেন। প্রতিবেশী এতিম, বিধবা ও ভাইদের প্রতি খেয়াল রাখতেন। সাধ্যমত সাহায্য করতেন।
→ঘরোয়া কাজ
মুহাম্মদ স. ঘরের কাজ হাসি মুখে করতেন। ঘর পরিষ্কার করতেন। পশুদের যাবার দিতেন। ভেড়া ছাগলের দুধ দোহন করতেন। কাপড় সেলাই করতেন। বাজার করতেন। পাড়ে করে মাল বহন করেছেন। যাঁতার আটা পিষতেন। সাহাবীদের সঙ্গে সফরে বের হলে নিজ হাতে কাজ করতেন। এমনকি তাদের থেকে বেশি কাজ করার চেষ্টা করতেন।
→ প্রকৃতির ডাকে :
প্রাকৃতির প্রয়োজনে জুতো পরে মাথা ঢেকে বাম পা আগে দিয়ে প্রবেশ করতেন। দোওয়া পড়তেন। কাজ সেরে ডান পা আগে দিয়ে বের হতেন। শোকরিয়া আদায় করতেন।
→ আকৃতি :
হজরত মুহাম্মদ স. মধ্যম আকৃতির (অবয়ব) উজ্জ্বল গৌরকান্তি, দুধে আলতা মেশান রং, অন্যভাবে বলা যায় সুন্দর গমের মত রং, প্রশস্ত লালটি, যুগল ভু পটলচেরা দুই চোখ, মাংসাল মার্জিত চেহারা দাঁত খুব ঘন সন্নিবিষ্ট ছিল, উঁচু গর্দান, বড় মাথা, প্রশস্ত বক্ষ স্থল, মাথার চুল ছিল কোঁচকান। ঘন দাড়ি, সুরমার মতো রঙিন গভীর কালো চোখ, ঘন লম্বা পলক, মাংসাল বাহুমূল, সুলম্বিত দুই বাহু। বক্ষদেহ হতে নাভী পর্যন্ত হালকা চুলের রেখা এবং দুই বাহুতে হালকা পশম। দুই হাত চওড়া এবং মাংস পূর্ণ। সুগঠিত পদযুগলের গুচ্ছদেশ ছিল হালকা ধরনের। পায়ের পাতার মধ্যভাগ কিছুটা মাংস শূন্য ছিল। এমনকি পায়ের নিচে দিয়ে পানি অন্য দিকে চলে যেতে পারত।
ইসলাম গ্রহণের পর এক ইহুদী বলেন, আল্লাহর কসম! এই পবিত্র চেহারা কোন মিথ্যাবাদীর হতে পারে না।
এক ছাবের নামীয় সাহাবিকে জিজ্ঞাসা করা হয় রসূলের চেহারা কি তরবারির মত চমকাত? সাহাবি বলেন, না বরং পূর্ণ চন্দ্রের মত। এই সাহাবী অন্যত্র বলেছেন মেঘ লেশহীন এক শুক্ল পক্ষের রাত্রিতে আমি হজরত মুহাম্মদ স.-এর চেহারা মোবারকের দিকে একবার আর একবার আকাশের পূর্ণ চন্দ্রের দিকে তাকিয়েছিলাম। আমার দৃষ্টিতে তাঁর পবিত্র চেহারা চন্দ্রের চাইতেও উজ্জ্বলতর বলে প্রতিভাত হল।
এক সাহাবি বলে, আমি উত্তম পোষাক পরিহিত বহু সৌখিন লোক দেখেছি কিন্তু হুজুর স.-এর চাইতে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বব্যঞ্জক চেহারার কোন লোক আজ পর্যন্ত আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি।
রসুল স.-এর পবিত্র শরীর থেকে নির্গত ঘামে এক প্রকার সুগন্ধ বের হত। চেহারার ধর্মবিন্দু মতির ন্যায় চমকাত।
পবিত্র বদন ছিল রেশমের চাইতেও মসৃণ এবং শরীরের গন্ধ ছিল মেশক অম্বরের চাইতেও সুগন্ধময়। হজরত মুহাম্মদ স. এর দেহের কোন ছায়া পড়ত না। (কোন সনদ দ্বারা এরূপ বর্ণনা পাওয়া যায় না)।
→ মোহরে নবুওত (নবুওতের চিহ্ন) :
পিঠে দুই বাহুমূলের মধ্যবর্তি স্থানে মুহাম্মদ স. এর নবুওতের চিহ্ন ছিল। ইহা সাধারণত পায়রার ডিমের আকৃতির লাল রং-এর সামান্য উত্থিত মাংস বলে মনে হত।
→ চুল :
মাথার চুল গর্দান পর্যন্ত প্রবলম্বিত থাকত। প্রথম জীবনে ইনি চল সিঁথি কাটিতেন না। মক্কা বিজয়ের পর চুলে সিঁথি তৈরি করতেন।
মাঝে মাঝে চুলে তেল ব্যবহার করতেন। অন্তত: একদিন অন্তর চিরুণী ব্যবহার করতেন। ইন্তেকালের সময় বেশ কয়েকখানা দাড়ি পেকেছিল।
→নখ :
পনের দিন পর পর নখ কাটতেন। হাতের নখ ডান হাতের সাহাদাৎ আংগুল থেকে কাটা শুরু করতেন। পায়ের আঙ্গুলের ক্ষেত্রে আগে ডান পা পরে বাম পায়ের নখ কাটতেন।
→ পোষাক :
কামিজ, চাদর ও তহবন্দ পরিধান করতেন। কোনদিন পাজামা পরিধান করেননি। কেউ কেউ বলেন, পাজামা একবার পরিধান করেছেন। পোষাক ডান দিক থেকে পরতেন। জামার বুকের অংশ খোলা থাকত। নাভির ওপরে লুঙ্গী পরতেন। সাহাবীরা পরতেন পায়জামা তা দেখে খুশী হতেন। চর্ম নির্মিত কালো রঙের মোজা পরতেন, হাঁটু পর্যন্ত মোজা পরতেন।
→ পাগড়ী :
মাথায় পাগড়ী বাঁধতেন, কোন সময় গর্দান পর্যন্ত, কোন কোন সময় কাঁধের ওপর, পাগড়ীর নিচে টুপি থাকত। পাগড়ীর লেজ এক বিঘত ঝুলে থাকত। কালো রঙ-এর পাগড়ীও পরতেন। সবুজ রঙেরও পরেছেন।
→ চাদর :
ইয়েমেনি চাদর একে হেবরা বলা হয়। পরিধান করতেন।
→ আবা :
সিরিয়ার আবা ব্যবহার করতেন। আস্তিন ও কার্পেটের মধ্যে রেশমের কাজ করা নওশেরওয়ানি আবা ব্যবহার করতেন।
→ কম্বল :
কম্বল ব্যবহার করতেন। ইয়েমেন তৈরি লাল কাজ করা সুদৃশ্য চাদর ব্যবহার করেছেন। এই চাদরকে 'হুল্লায়ে বামরা' বলা হত। লাল রং পছন্দ করতেন না। পুরুষের জন্য লাল রং জায়েজ নেই। সাদা রং সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় ছিল।
→ জুতা :
দু ফিতাওয়ালা জুতা ব্যবহার করতেন। একে নালাইন বলা হয়। জুতা ডান পা থেকে পরতেন। বাম পা থেকে খুলতেন।
→ বিছানা :
চামড়ার ভিতর খেজুরের খোসা ভরা গদি করা হয়েছিল। তুলা থাকত না। চারপায়াও ব্যবহার করতেন। রুক্ষ দড়ির বিছানায় শুতেন তাতে পিঠে দাগ পড়ে যেত। চামড়ার ভিতর খেজুর ছাল পোরা বালিশ।
→ লাঠি :
হাঁটার সময় লাঠি ব্যবহার করতেন। খোৎবার সময় বড় লাঠি ব্যবহার করতেন।
→ দাঁতন :
বাবলা, নিম, খেজুরের দাঁতন ব্যবহার করতেন। দাঁত মাজতেন। ওপর নীচে। অনেক সময় ওজু করতে গিয়ে দাঁতন করতেন।
→কম্বল :
সাহাবীর মতামত অনুযায়ী সিলমোহররূপী আংটি তৈরি করেন। আংটি ছিল রূপার। এতে তিনটি শব্দ ছিল। মুহাম্মদ, রসূল, আল্লাহ। সাধারণত: ডান হাতে পরতেন না। বাম হাতে পারতেন, তবে মধ্যমায়ও পরতেন। এবং আংটির পত্রাদি দিলে ছাপ লাগাতেন। এই আংটিই মুসলিম সাম্রাজ্যে শিলমোহর।
→ বর্ম :
যুদ্ধের সময় বর্ম ব্যবহার করেছেন। ওহুদ যুদ্ধে দুটি বর্ম পরেছিলেন।
→ তরবারি :
কখন কখন রৌপ্য নির্মিত বাটওয়ালা তরবারী ব্যবহার করেছেন।
→ বাড়ি :
মসজিদে নববীর পাশে প্রথমে দুটি ঘর করেন, পরে ন'টি। ঘরের দরজায় থাকত চামড়ার পর্দা টাঙানো। ছোট দরজা।
→ হাঁটা :
দ্রুত চলতেন। সামনের দিকে ঝুঁকে চলতেন। মনে হয় নীচে নামছেন।
→ কথাবার্তা :
কথা মৃদু স্বরে, মধুর ও হৃদয়গ্রাহী। কারো কথার উপর কথা বলতেন না। সহজ সাবলীলভাবে কথা বলতেন। গুরুত্বপূর্ণ কথা তিনবার উচ্চারণ করতেন। ভাষণ দেবার সময় গুরুগম্ভীর স্বরে বলতেন আকাশের দিকে তাকিয়ে। ইশারা করতে হলে হাত তুলে করতেন।
→ হাসি :
হাসির কথা হলে ঝুঁকে পড়তেন। কদাচিত হাসলেও মুচকি হাসতেন। অধিক হাসলে উপরিভাগের দাঁত বের হয়ে পড়ত। অট্টহাসি হাসতেন না।
→ কান্না :
উচ্চস্বরে কাঁদতেন না। কান্নার সময় চোখের পানি গড়িয়ে পড়ত। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে 'আহ্' বলতেন।
→ চুম্বন :
নাতি ও অপরের শিশুকে কোলে নিয়ে মুখে চুম্বন দিতেন।
→ ধাত্রী :
ওম্মে আয়মন ও সোয়াইবিয়া ।
→ দুধমা :
হালিমা
→ দুধভাই :
আব্দুল্লাহ
→ দুধ বোন :
সাইমা
→ খাদেমগণ :
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রা., হজরত বেলাল রা., হজরত আনাস ইবন মালেক ।
→ সমগ্র জীবনে বাসস্থান :
২৫ বৎসর পর্যন্ত মক্কায় ১০দিন আমিনার কোলে। তারপর হালিমার গৃহে ৫ বৎসর। ১ বৎসর মক্কার উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বাড়িতে। ৬ বছর থেকে দাদা আব্দুল মোত্তালেব ও চাচা আবু তালিবের কাছে। ২৫ বৎসরে বিবাহের পর খাদিজার গৃহে কি নিজগৃহে সূত্র পাওয়া যায় না। পৈত্রিক বাড়ি সাকিল দখল করেন ইনি মুসলমান হন নাই। মদিনায় হিজরত করে কুলসুমের বাড়ি ১০ দিন কি ১৪ দিন। তারপর আবু আইয়ুব আনসারীর বাড়ি ৭ মাস। দোতলায় থাকতেন না। তারপর মসজিদুন্নবীর পাশে সপরিবারে।
ঘরগুলোর বারান্দা ছিল না। ছ-সাত হাত চওড়া। ন'টি ঘর। খেজুর শাখার মধ্যে মাটি দিয়ে দেওয়াল ও ছাদ। দেওয়াল ছাদ রোদ বৃষ্টি আটকাত না। বৃষ্টিতে পশমের কম্বল টাঙিয়ে আত্মরক্ষা করা হত। উচ্চতা মাথায় ঠেকত। একটি করে দরজা প্রতি ঘরে। ৮৮ হিজরি সনে মদিনার শাসনকর্তা আব্দুল আজিজ এগুলো ভেঙে মসজিদের সঙ্গে যুক্ত করেন। মদিনাবাসি এতে বাধা দেন।
→ তেল ব্যবহার :
মাথা দাড়ি তেল ব্যবহার করতেন। এরপর আঁচড়াতেন। দাড়ি পানি লাগিয়েও আঁচড়াতেন।
→ রোগীর সেবাযত্নে :
রুগী দেখতে কোন প্রয়োজনে কারো বাড়ি গেলে দরজার এক পাশে দাঁড়িয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে অনুমতি চাইতেন। রোগীর কপালে হাত রেখে দোওয়া চাইতেন। রসুল অমুসলিম রোগীদের সেবা করতে যেতেন।
→ ওয়াজ নসিহত ঃ
রসুল সব সময়ই ওয়াজ নসিহত করতেন, পবিত্র কোরআন নাজেল হলে সাহাবীদের শোনাতেন। মানুষেরা মসলা মাসায়েল জিজ্ঞাসা করলে আন্তরিকতার সঙ্গে শোনাতেন। ওয়াজ একদিন বিরত দিয়ে করতেন। যাতে শ্রোতা বিরক্ত না হন ।
→ শেষ কার্য :
১৩ দিন অসুস্থ থেকে (শেষ জামাতের সঙ্গে নামাজ মাগরিবের) আয়েষার ঘরে আয়েষার কোলে মাথা রেখে ইয়া রফিকে আলা বলতে বলতে শেষ নিঃশ্বাস পেলেন। প্রথমে গোসল, পরে ইয়েমনি কাপড় বাদ দিয়ে সাধারণ তিনটি কাপড় কাফন দেওয়া হয়। গোসল দেওয়া হয় কোবার কুয়ার পানিতে। এবং কুল পাতা সহযোগে গরম করে গোসল করান হয়। তার পূর্বে এককভাবে পুরুষ মহিলা ও বাচ্চারা জানাজা পড়েন। পরে আয়েষা রা. কোন বাথা তৈরি না করে ঐ ঘরে শয়ন করতেন।
Egypt.
Holy Prophet's missive to Al Muqauqis, the King of "In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful', - From Muhammad, Allah's Servant and His Messenger, to Muqawqis, the Coptic King. Peace be upon (him) who obey the true Guidance. Now then! Verily call you to the call of Islam. Embrace Islam, you will remain in peace and safety. You will be bestowed with a twofold reward by Allah. But if you turn away, you will be responsible for all sin committed by the Copts.'
Say : O People of the Book! Come to a common agreement between us and you that we shall worship none but Allah and we shall ascribe no partner unto Him and that none of us shall take others as Gods beside Allah. And if they turn away, then say: Bear witness that we are they who have surrendered (unto Him) -
Al Quran.
(Seal) :
Muhammad, Allah's Messenger
• মিশরের শাসনকর্তা আল মুকাও কিসের কাছে মুহাম্মদ স. পত্র "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম' (পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে)
আল্লাহর বান্দাহ (দাস) ও তাঁর প্রেরিত পুরুষ মুহাম্মদের পক্ষ থেকে মিশরের রোমান শাসনকর্তা আল-মুকাওকিসের প্রতি - সত্যপথ অনুসরণকারীর উপর শান্তি বর্ষিত হউক। এরপর আমি আপনাকে ইসলামের দিকে আহ্বান করছি – ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তি ও নিরাপদে থাকবেন মহান আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুণ পুরস্কৃত করবেন। কিন্তু যদি প্রত্যাখ্যান করেন তাহলে সমগ্র রোমান সম্প্রদায়ের (কৃত) পাপের বোঝা আপনার উপর বর্তাবে।'
'হে আহলে কিতাব (গ্রন্থধারীসকল) এস সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে অভিন্ন : আমরা আল্লাহ ব্যতীত আর কারো উপাসনা করি না এবং কোন কিছুকেই তাঁর সঙ্গে অংশীদার করি না অথবা আমাদের কেউ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করে না। অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলুন তোমরা সাক্ষী থাক যে আমরা মুসলিম (আত্মসমর্পনকার)।
- আল-কুরআন।
(মোহর) : মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ।
Holy Prophet's missive to the King of Abussinia. "In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful," "In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful. " "From Muhammad, Allah's Messenger, to king Negus. Peace be upon (him) who obeys the true Guidance. Now then, I praise Allah before you that there are no Gods but Allah, the King, the Holy, the peace and giver of safety and the Guardian (of all). And I bear witness that Isa, the son of Mariam, is the Ruh (spirit) of Allah and His Kaleema (word) which he cast into Mariam, the Virgin, the pure (and) the immune to conceive Isa from his spirit and His Blowing as He created Adam with His Hand and Verily I Call you to Allah, the only and He has no partner and to the friendship based upon mutual unity which are acquired on being prayed to Allah. Verily, I am Allah's Messenger I call you and your subjects to Allah, the Mighty and the Exalted. Verily, I conveyed the message of Allah to you and call to accept my exhortations and peace be upon him who obeys (His) true Guidance'.
(Seal)
Muhammad Allah's Messenger
আবিসিনিয়ার রাজা নাগাশী (নাজ্জাশী) কে বিশ্বনবী (সঃ) র পত্র “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” – (পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে) “আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ মুহাম্মদের পক্ষ থেকে রাজা নাগাশীর প্রতি সত্যের অনুসরণকারীদের উপর শান্তি বর্ষিত হউক। অতঃপর আমি সেই মহান আল্লাহর স্তুতি-প্রশংসা আপনার সামনে করছি যার বাইরে অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি রাজাধিরাজ, অতি পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদানকারী এবং (সকলের) প্রতিপালক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মরিয়ম-পুত্র ঈসা আল্লাহর রূহ (আত্ম) এবং তাঁর কলেমা (বাক্য) যা তিনি সতী-স্বাধ্বী কুমারী মরিয়মের ভেতরে নিক্ষেপ করেছিলেন। ঈসা তাঁর রূহ এবং ফুঁকের দ্বারা গর্ভে আসেন যেভাবে আদমকে তিনি নিজহস্তে সৃষ্টি করেছিলেন। নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সেই মহান আল্লাহর দিকে আহ্বান জানাচ্ছি যিনি একক, যার কোন অংশীদার নেই এবং সেই বন্ধুত্ব ও পরস্পর একতার দিকে আমন্ত্রণ করছি যা শুধু মহান আল্লাহর এবাদত (উপাসনা) দ্বারাই অর্জিত হয়। নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর দিকে আহ্বান করছি। আমি আল্লাহর বাণী ও উপদেশ আপনার নিকট পৌঁছিয়ে দিয়েছি। আমার উপদেশাবলী গ্রহণ করুন। সত্য-সরল পথ অনুসরণকারীর উপর শাস্তি (তার) বর্ষিত হউক।”
(মোহর) : মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ
D Holy Prophet's missive to Kesra (Khusru ), the Persian Emperor.
From Muhammad, Allah's Servant and His Messenger, to "In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful', -Kesra, the Emperor of Persia. Peace be upon (him) who obeys the Guidance and believes in Allah and His Messenger and bear witness that there is no Gods but Allah - the only and He has no Partner and Muhammad is His servant and Messenger. I call you to the call of Allah. Verily, I am Allah's Messenger for the entire mankind so that I may warn (the people) who are alive and the (said) saying is proved 1 the unbelievers. Embrace Islam - you will remain in peace. But if you decline, you will be responsible for the sin committed upon by the Magi.
-(Seal) : Muhammad, Allah's Messenger
পারস্য-সম্রাট কেসরা (খসরু)র নিকট বিশ্বনবী (সঃ)র পত্র “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” – (পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে) “আল্লাহর বান্দাহ (দাস) ও তাঁর প্রেরিত পুরুষ মুহাম্মদের পক্ষ থেকে মহাপ্রতাপান্বিত পারস্য সম্রাট কেসরার প্রতি
তাদের উপর শান্তি বর্ষিত হউক যারা আল্লাহর বিধান মানে এবং আল্লাহ ও তাঁর প্রেরিত পুরুষকে বিশ্বাস করে এবং সাক্ষ্য দেয় যে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই – তিনি একক, তাঁর অংশীদার নেই এবং মুহাম্মদ তাঁর বান্দাহ ও প্রেরিত পুরুষ। আমি আপনাকে আল্লাহর প্রদর্শিত পথে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি যেহেতু আমি সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ। আমি যেন জীবিত লোকদের সতর্ক করতে পারি এবং অবিশ্বাসীদের জন্য কথাগুলো প্রমাণিত হয়ে থাকে। ইসলাম গ্রহণ করুন তাহলে অগ্নিপূজক সকলের (কৃত) পাপের জন্য আপনি দায়ী হবেন।” শান্তিতে থাকবেন। কিন্তু যদি প্রত্যাখ্যান করেন
Rome.
(মোহর) : মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ
a Holy Prophet's missive to Heraclius, the Emperor of "In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful', 'From Muhammad, Allah's servant and his Messenger, to Heraclius, the Emperor of Rome. be in peace and two fold rewards would be bestowed upon you by Allah. But if you turn away, then you will be responsible for the sin of your people.''Say : O People of the Book! Come to a common agreement between us and you that we shall worship-none of us shall take others as gods beside Allah. And if they turn away, then say : Bear witness that we are they who have surrendered (unto Him)'.
- Al Quran
(Seal) : Muhammad, Allah's Messenger
রোম সম্রাট হারকিউলিসের নিকট বিশ্বনবী (সঃ)র পত্র “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” (পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে) “আল্লাহর বান্দাহ (দাস) ও তাঁর প্রেরিত পুরুষ মুহাম্মদের পক্ষ থেকে রোম- প্রধান হারকিউলিসের প্রতি। সত্যের অনুসারীদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হউক। অতঃপর আমি আপনাকে ইসলামের দিকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, আপনার কল্যাণ হবে। ইসলাম গ্রহণ করলে আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুণ পুরস্কৃত করবেন। কিন্তু যদি আপনি অস্বীকার করেন তাহলে সকল প্রজাসাধারণের (কৃত) পাপের জন্য আপনি দায়ী থাকবেন।
“হে আহলে কিতাব (গ্রন্থধারীসকল) এস সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে অভিন্ন : আমরা আল্লাহ ব্যতীত আর কারো উপাসনা করি না এবং কোন কিছুকেই তাঁর সঙ্গে অংশীদার করি না অথবা আমাদের কেউ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করে না। অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলুন তোমরা সাক্ষী থাক যে আমরা মুসলিম (আত্মসমর্পণকারী)”
আল-কুরআন।
(মোহর) : মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ
Holy Prophet's missive to the Governor of Bahrain "In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful', - 'From Muhammad, Allah's Messenger, to Munzer bin Sawa. Peace be upon you. Verily before you! I praise Allah that there is no God other than He and I bear witness that there is no God but He and Muhammad is his Servant and His Messenger. Verily, I remind you of Allah, the Mighty and the Exalted. Who ever exhorts, exhorts for himself and whoever obeys my envoys have praised you and I hereby request you about your people that leave Muslims upon what they embraced Islam and I (have) pardoned the errants, so you accept them. So long you remain upon good deeds (Islah), I would not depose you from your position and those who (wish to) remain as Jew or Magi shal I have to pay Jizya. '
(Seal) : Muhammad Allah's Messenger
বাহরাইনের গভর্ণর মুনজের বিন সাওয়ার নিকট বিশ্বনবী (সঃ)র পত্র “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” – (পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে) “আল্লাহর বান্দাহ (দাস) ও তাঁর প্রেরিত পুরুষ মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে মুনজের বিন সাওয়ার প্রতি আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হউক। আমি আপনার সামনে সেই মহান আল্লাহর স্তুতিপ্রশংসা করছি যার বাইরে অন্য কোন উপাস্য নেই এবং এই কথার সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ তাঁর বান্দাহ ও প্রেরিত পুরুষ। নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সেই মহিমান্বিত সর্বশক্তিমান আল্লাহর কথা স্মরণ করে দিচ্ছি। যারা উপদেশ গ্রহণ করে তারা স্বয়ং নিজের মঙ্গলের জন্যই উপদেশ গ্রহণ করে। যারা আমার দূতের প্রতি মান্যতা প্রদর্শন করবে এবং তার নির্দেশ অনুসরণ করবে, নিঃসন্দেহে তারা আমাকে মেনেছে এবং যারা তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে, নিঃসন্দেহে তারা আমার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করল। নিশ্চয়ই আমার দূতরা আপনাকে অনেক প্রশংসা করেছে। আপনার সম্প্রদায় সম্পর্কে আপনার নিকট আমি অনুরোধ জানাচ্ছি যে মুসলমানদের তাদের ইসলাম গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে ছেড়ে দিন এবং দোষীলোকদের আপনি গ্রহণ করুন যেহেতু আমি তাদেরকে ক্ষমা করেছি। যতক্ষণ আপনি শুভকার্যের উপর বহাল থাকবেন ততক্ষণ আমি আপনাকে আপনার দায়িত্ব থেকে অপসারণ করব না। যারা ইহুদী ও অগ্নি উপাসকরূপে থাকার ইচ্ছা পোষণ করে তাদের জিযিয়া কর আদায় দিতে হবে।”
নরপতিপাড়া, নদীয়া,
(মোহর) : মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ
#হজরতমহম্মদ #ইসলাম
0 Comments