উতঙ্কের গুরুদক্ষিণা উপাখ্যান


উতঙ্কের গুরুদক্ষিণা উপাখ্যান 

ঋষি আয়ুদধৌম্যের তৃতীয় কৃতি শিষ্য ছিলেন 'বেদ'। আচার্য একদিন প্রসন্ন হয়ে বেদকে বললেন— “বৎস, কিছুদিন আমার আশ্রমে থাকো, আমার সেবা শুশ্রুষা করো, তোমার কল্যাণ হবে।”

বেদ গুরুর আদেশ হাসিমুখে মেনে নিলেন। গুরুসেবার জন্য গুরুর গৃহে থেকে গেলেন। গুরু যখন যা আদেশ করতেন, যত কষ্টই হোক, সেগুলি উপেক্ষা না করে অম্লান বদনে তিনি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন। গুরুর কাজে তাঁর বিন্দুমাত্র অবহেলা ছিল না। এভাবে বহুকাল কেটে গেল। গুরু আয়ুদধৌম্য শিষ্যের কর্তব্য- নিষ্ঠায় এক সময় প্রসন্ন হলেন। বললেন- “বৎস তোমার গুরুভক্তিতে আমি অত্যন্ত সন্তুষ্ট। তোমাকে আশীর্বাদ করছি, তুমি সর্বশাস্ত্রে পণ্ডিত হবে। সর্বজ্ঞতা লাভ করবে।”

বেদ এরপর বাড়ি এলেন। গার্হস্থ্য ধর্মে মন দিলেন। দিনে দিনে তাঁর খ্যাতি বাড়তে থাকল। তাঁরও ক্রমে তিন জন শিষ্য হলো। শুরু বেদ, শিষ্যদের কোনো কায়িক কাজে লাগাতেন না। গুরুকুলবাসের দুঃখ-কষ্ট তাঁকে বেশ নাড়া দিয়েছিল। শিষ্যগণকে কষ্ট দেওয়া তাই তাঁর রুচিবিরুদ্ধ ছিল। একবার এক দূরপ্রদেশে যাজন কাজে তাঁর ডাক পড়লো। তিনি তাঁর অন্যতম শিষ্য উতঙ্ককে ডেকে বললেন- “আমি বাড়ির বাইরে যাচ্ছি। বেশ কিছুদিন থাকব না। তোমাকে বাড়ির দেখাশুনার জন্য রেখে যাচ্ছি। কোন সমস্যা হলে তুমি তার বিহিত করবে।” – এই বলে শুরু বেদ প্রবাসে গমন করলেন। উতঙ্ক গুরুর আদেশ অনুযায়ী নিজ দায়িত্ব পালন করতে লাগলেন। একদিন গুরুপত্নী উতঙ্ককে বললেন- “তোমার ও রুমাতা ঋতুমতী হয়েছেন। এ সময় তোমার গুরুদেব বাড়িতে নেই। তুমি ঋতু যাতে নিষ্ফল না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় কর্তব্য পালন করো।”

ও রুমাতার এমন কথায় উতঙ্ক অখুশী হয়ে বললেন- “আমি এমন অসঙ্গত কাজ করতে পারি না। আমার গুরুদেব এমন অন্যায় কোনো কাজ করার নির্দেশ আমাকে দিয়ে যান নি।” কিছুদিন পরে গুরু গৃহে ফিরলেন। উতঙ্কের সদাচার ও প্রকৃত শিষ্যের ন্যায় তার আচরণ পালন সম্পর্কে অবহিত হলেন। তখন উতঙ্ককে ডেকে বললেন- “পুত্র! তুমি যথার্থ কর্তব্য পালন করেছো। তুমি আমার যোগ্য শিষ্যের মত কাজ করেছো। আমি আশীর্বাদ করছি, তোমার সকল মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবে। তুমি নিজ গৃহে ফিরে যাও।"

গুরুর আশীর্বাদ পেয়ে উতঙ্ক বললেন— “গুরুদেব আমি গুরুদক্ষিণা দিতে চাই । আমি শুনেছি যিনি দক্ষিণা না দিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন, বা যিনি গুরুদক্ষিণা না নিয়ে শিক্ষা দান করেন, তাঁদের মধ্যে একজন হয় মারা যান; না হলে তাঁদের মধ্যে বিদ্বেষ গড়ে ওঠে। হে দেব, আপনি আদেশ করুন, আমি আপনাকে কিভাবে দক্ষিণা দিতে পারি।”

উতঙ্কের বারবার দক্ষিণা দেওয়ার ইচ্ছা শুনে গুরু বললেন— “তোমার গুরুমাতাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করো, এবং তিনি যেভাবে বললেন সেভাবে গুরুদক্ষিণা সংগ্রহের ব্যবস্থা করো।”

এরপর গুরুমাতার কাছে গিয়ে উতঙ্ক বললেন— “মাতা! গুরুদেব আমাকে গৃহে ফিরতে আজ্ঞা করেছেন। কিন্তু আমার বিশেষ অভিলাষ আপনার ইচ্ছামতো গুরুদক্ষিণা দিয়ে আমি ঋণমুক্ত হই।”

গুরুপত্নী বললেন- “পুত্র! পৌষ্য রাজার স্ত্রী যে দুটি কুণ্ডল ধারণ করেন তা এনে তুমি আমাকে দাও। চারদিন পর ব্রত উপলক্ষে একটি বড় অনুষ্ঠান হবে। আমি সেই কুণ্ডল পরে ঐ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত ব্রাহ্মণদের ভোজন পরিবেশন করবো । এতে তোমার কল্যাণ হবে। না হলে তোমার কল্যাণ লাভ হওয়া মুশকিল।”

গুরুমাতার নির্দেশ মতো উতঙ্ক বেরিয়ে পড়লেন কুণ্ডল সংগ্রহের উদ্দেশে। পথ চলতে চলতে হঠাৎ রাস্তায় একটি বৃষের দর্শন পেলেন, যার ওপর একজন দীর্ঘদেহী ব্যক্তি বসে আছেন। তিনি উতঙ্ককে বললেন— “তুমি এই বৃষের গোবর ভক্ষণ করো।” উতঙ্ক এই কথায় ইতস্তত বোধ করলে সেই ব্যক্তি পুনরায় বললেন- “সংকোচ কোরো না, তোমার গুরুদেবও আগে এটি খেয়েছেন।”

উতঙ্ক আর কথা না বাড়িয়ে ঐ বৃষের গোবর এবং মূত্র খেয়ে নিলেন। তারপর হাত মুখ ধুয়ে রাজা পৌষের উদ্দেশে রওনা দিলেন।

এরপর তিনি রাজার কাছে পৌঁছে রাজাকে যথাযোগ্য সম্মাননা জানিয়ে বললেন- “হে রাজন। আমি আপনার কাছে কিছু পাবো এই আশায় এখানে এসেছি।” –এই বলে তিনি রানিমার কুণ্ডলদ্বয়ের কথা বললেন।

রাজা পৌষ্য উতঙ্ককে অভ্যর্থনা জানালেন এবং রানিমার কাছে যেতে বললেন। কিন্তু অন্দরমহলে প্রবেশ করে উতঙ্ক কিছুতেই রানিমার সন্ধান পেলেন না। তখন রাজার কাছে ফিরে এলেন এবং তাঁকে রানিমার অদর্শনের কথা জানালেন।

রাজা পৌষ্য তখন উতঙ্ককে বললেন- “মনে হয় আপনি অশুচি আছেন। আমার রানি অত্যন্ত পতিব্রতা, কোন অধার্মিক বা মিথ্যাচারী তাঁর দর্শন পান না।”

উতঙ্ক তখন স্মরণ করলেন, পথ চলাকালীন তিনি গোময় ও গোমূত্র খেয়েছেন এবং তিনি জানতেন যে, পথ ভ্রমণকালে খাদ্য গ্রহণ বিধিসম্মত নয়। তখন নিজেকে শুদ্ধ করার জন্য তিনি পূর্বমুখী হয়ে হাত, পা এবং মুখ ধুয়ে তিনবার আচমন করে ভালো করে মুখ ধুলেন। এরপর পুনরায় অন্তঃপুরে গেলেন এবং এবার সত্যি সত্যি রানিমার সাক্ষাৎ পেলেন।

উতঙ্ককে দেখে রানিমা উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানালেন। বললেন- “আমি আপনার কি কাজ করতে পারি ?”

উতঙ্ক তখন বললন- “হে রাজমহিষী! গুরুদক্ষিণা হিসাবে আমার গুরুমাতা আপনার কুণ্ডলদ্বয় পেতে চান। দয়া করে আমাকে তা দান করুন। তাহলে আমি ঋণমুক্ত হই।”

রাজমহিষী উতঙ্কের এই প্রার্থনায় খুশি হয়ে তাঁর কুণ্ডল দুটি উতঙ্কের হাতে তুলে দিলেন। সেই সঙ্গে বললেন— “নাগরাজ তক্ষকের এই কুণ্ডলদ্বয় খুব পছন্দের। তাই সাবধানে এটি নিয়ে যাবেন।”

প্রত্যুত্তরে উতঙ্ক বললেন– “আপনি আশঙ্কিত হবেন না। নাগরাজ আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।”

কুণ্ডলদ্বয় সংগ্রহ করে ফিরে আসার পথে উতঙ্ক লক্ষ্য করলেন যে, একজন নগ্ন সন্ন্যাসী তাঁকে অনুসরণ করছেন। তিনি আবার মাঝে মাঝে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছেন। যাইহোক, স্নান তর্পণাদির জন্য উতঙ্ক একসময় কুণ্ডলদ্বয় তীরে রেখে একটি সরোবরে গমন করলেন। সেই সুযোগে সন্ন্যাসী-বেশী তক্ষক কুণ্ডল দুটি চুরি করলেন। সামান্য পরে স্নান-তর্পণ সেরে সরোবর তীরে এসে তক্ষক দেখলেন যে, কুণ্ডল দুটি নিয়ে তক্ষক পালাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে উতঙ্ক তার পেছনে ধাওয়া করলেন। কিন্তু যেইমাত্র উতঙ্ক সন্ন্যাসীর কাছাকাছি পৌঁছেছেন তক্ষক তখনই সন্ন্যাসী বেশ ছেড়ে তাঁর স্বরূপ ধারণ করলেন। তারপর হঠাৎ ভূমি বিদীর্ণ করে পাতাললোকে নিজ ভবনে চলে গেলেন। উতঙ্কের তখন রাজমহিষীর সতর্কবাণী মনে পড়লো। তিনি তখন পাতালে প্রবেশ করার জন্য সম্ভাব্য সকল চেষ্টা করলেন। কিন্তু সফল হলেন না। তাঁর এই অসহায় অবস্থা দেখে দেবরাজ ইন্দ্রের করুণা হলো। তিনি উতঙ্ককে সাহায্যের জন্য বজ্রকে পাঠালেন। যাইহোক, শেষ পর্যন্ত বজ্রের সহায়তায় তিনি পাতালে প্রবেশ করতে সমর্থ হলেন। নাগলোকে প্রবেশ করে উতঙ্ক নাগদের স্তব করতে শুরু করলেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষা এবং সম্ভাব্য সকল চেষ্টা সত্ত্বেও যখন তিনি কিছুই করতে পারছিলেন না, তখন সেখানে এক দিব্য পুরুষ-রূপী ইন্দ্রের দেখা পেলেন । তিনি উতঙ্ককে পরামর্শ দিলেন তাঁর ঘোড়াটির পশ্চাৎদেশে ফুঁ দিতে। সেই মতো ফুঁ দেওয়ার ফলে ঘোড়ার শরীর থেকে ভয়ংকর এক অগ্নি স্ফুলিঙ্গ নির্গত হতে লাগল। তা দেখে সকল নাগ সহ নাগরাজ তক্ষক খুব ভয়ে পেলেন। এবং কালবিলম্ব না করে তিনি উতঙ্ককে কুণ্ডলদ্বয় প্রত্যার্পণ করলেন। যাইহোক, ঐ দিনই ছিল গুরুপত্নীর ব্রত পালনের দিন। অথচ উতঙ্ক তখন বহু দূরে। কিভাবে গুরুমার হাতে এই কুণ্ডল দুটি তুলে দেওয়া যায়— এই কথা উতঙ্ক যখন ভাবছেন তখন সেই দিব্যপুরুষ তাঁর ঘোড়াটি উতঙ্ককে দিলেন এবং বললেন— “এই ঘোড়ায় চড়ে সত্ত্বর গুরুপত্নীর কাছে গিয়ে কুণ্ডলদ্বয় প্রদান করো।” এরপর খুব তাড়াতাড়ি উতঙ্ক গুরুগৃহে পৌঁছোলেন এবং গুরুমাতার হাতে কুণ্ডলদ্বয় তুলে দিলেন। তখন গুরুদেব উতঙ্ককে এত বিলম্ব কেন হলো জানতে চাইলে উতঙ্ক তখন সমগ্র ঘটনা সবিস্তারে বর্ণনা করলেন।

গুরুদেব তখন বললেন- “পুত্র! তুমি পথে যে বৃষটি দেখেছো, তা হলো দেবরাজের ঐরাবত। যে অশ্বটি দেখেছো তিনি হলেন স্বয়ং অগ্নি। আবার যে দিব্য পুরুষকে তুমি বৃষে আরোহন করতে দেখেছো, তিনি হলেন স্বয়ং দেবরাজ ইন্দ্র। যে গোবর তুমি ভক্ষণ করেছো, তা হলো অমৃত। দেবরাজ ইন্দ্র হলেন আমার সুহৃদ, পরম বন্ধু । একমাত্র তাঁর কৃপাতেই তুমি নাগলোক থেকে এই কুণ্ডল উদ্ধার করে আনতে পেরেছো। না হলে এই কাজ তোমার দ্বারা সম্ভব হতো না। ”

এখন তোমাকে অনুমতি দিচ্ছি। তুমি গৃহে ফিরে যাও । জীবনে সফলকাম হও । উতঙ্ক এরপর গৃহে ফিরে গিয়েছিলেন এবং গুরুর আশীর্বাদে তাঁর জীবন যে ধন্য হয়েছিল তা সহজেই অনুমান করা যায়। আয়ুদধৌম্য থেকে বেদ, আবার বেদ থেকে উতঙ্ক, অর্থাৎ গুরু-শিষ্যের এই যে পরম্পরা তা স্নেহ, ভালোবাসা এবং পারস্পরিক সৎ বিশ্বাসের নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ। সেখানে নেই কোন চাওয়া-পাওয়া; নেই কোন আত্মপ্রতিষ্ঠা প্রদর্শনের উৎসাহ বা প্রয়াস। তাঁরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ লক্ষ্য পূরণে অবিচল, শান্ত সমাহিত প্রাচীন ভারতীয় ঋষিকুলের যথার্থ প্রতিনিধি। যেখানে জীবন মহিমান্বিত হয়েছে ত্যাগের মহিমায়। নিরবচ্ছিন্ন মানবিক মূল্যবোধ ও অকৃপণ ভালোবাসায়। আলোচ্য গল্পটি মহাভারতের আদি পর্বের তৃতীয় অধ্যায়ে বর্ণিত কাহিনীর আধারে লিখিত ৷ গুরুর চরণে রাখলেন। তারপর বাকি আঙুলগুলি দিয়ে শর নিক্ষেপ করে দেখলেন তাঁর শরের গতি ও ক্ষিপ্রতা আগের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে কি না ? কিন্তু তার জন্য একলব্যের মনে কোন ক্ষোভ নেই। বরং আবার গভীর অনুশীলনের মাধ্যমে শরীরের এই ঘাটতিকে পূরণ করে পুনরায় নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন এক দুর্ধর্ষ অপরাজেয় যোদ্ধা হিসাবে। মহাভারতের এক বিস্ময় চরিত্র হলো একলব্য। ভীষ্ম সহ অন্যান্য খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের মতো তার না ছিল বংশ পরিচয়, না ছিল দৈহিক গঠন। কিন্তু নিজের চেষ্টা, পরিশ্রম ও সাধনার গুণে ধনুর্বিদ হিসাবে তার দক্ষতা অর্জুনকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও এটা সত্যি যে,  একলব্য মহাভারতের অন্যতম একটি অবহেলিত চরিত্র।

একলব্য ছিল নিষাদ রাজার কুমার। অনার্য হিসাবে তখন তারা সমাদর পেতেন না। তাদের খর্বাকৃতি দৈহিক গঠন, কৃষ্ণ গাত্রবর্ণ এবং অন্যান্য অপটুতা-সমাজে তাদেরকে অবহেলিত করে রেখেছিল। আর্যরা এককথায় তাদের হীন, অস্পৃশ্য বলে বিচার করতো। এরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে একলব্য স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ একজন ধনুর্ধর হিসাবে গড়ে তোলার। সে সময় দ্রোণাচার্য ছিলেন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন অস্ত্রগুরু। তার অধীনে অস্ত্র শিক্ষার বাসনা নিয়ে একলব্য এসেছিলেন হস্তিনাপুরে। একলব্যের সেই ইচ্ছা দ্রোণাচার্যে পূরণ করেন নি। তাঁর শ্রেষ্ঠ ছাত্র ছিলেন অর্জুন। তিনি অর্জুনকে সর্বশ্রেষ্ঠ ধনুর্বিদ হিসাবে গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল যে, একক প্রচেষ্টায় একলব্য নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ ধনুর্বিদ হিসাবে গড়ে তুলেছেন। তা যখন দ্রোণাচার্য জানতে পারলেন; তা প্রশংসাতো পেলোই না, বরং গুরুর পূর্বানির্ধারিত সিদ্ধান্তকে অটুট রাখার জন্য গুরুর দক্ষিণা মেটাতে গিয়ে তার জীবনে নেমে এসেছিল এক দুঃসহ পরিণতি । কিন্তু একলব্যরা চিরকাল এমনই। যাঁরা হাসিমুখে দুঃখকে জয় করে জীবনের জয়গান গেয়ে গেছেন নিজস্ব ভঙ্গিতে, সীমাহীন দক্ষতায়। আসলে একলব্য ছিলেন একজন স্বশিক্ষিত ব্যক্তি। স্বশিক্ষিত ব্যক্তিদের বিরল দুটি গুণ হলো পরিশ্রম করার ক্ষমতা এবং প্রবল আত্মবিশ্বাস। আর একলব্যের মহৎ গুণটি হলো তাঁর আত্মবিশ্বাস যা তাঁর গুরুর প্রতি এবং নিজের প্রতি দৃঢ় ও সুসংবদ্ধ ছিল। তাই তাঁর সাফল্য ছিল চোখ বাঁধানো, অবিশ্বাস্য এবং দৃষ্টান্ত-সৃষ্টিকারী।

এই গল্পটি একটি বহুল শ্রুত রচনা যা, মহাভারতের আদি পর্বের একশো বত্রিশ তম অধ্যায় থেকে গৃহীত।

Post a Comment

0 Comments